নিজস্ব প্রতিবেদক: কক্সবাজারে বাজারে অতিবর্ষণে বন্যায় অর্ধশত গ্রাম পানির নেচে চলে গেছে। এতে জেলাটির সদর, কুতুবদিয়া, মহেশখালীতে ২১ হাজার পরিবার পানিবদ্ধ হয়ে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দুই শতাধিক ঘরবাড়ি।
বুধবার (২৮ জুলাই) প্রবলবর্ষণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
এর আগে বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সৃষ্ট লঘুচাপটি আরও শক্তি সঞ্চয় করে সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়েছে বলে জানায় আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ কারণে দেশের উপকূলীয় এলাকা ও সমুদ্রবন্দরগুলোতে জারি করা ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত বহাল রেখেছে। বুধবার (২৮ জুলাই) আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি আরও শক্তি সঞ্চয় করে সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। এরপর এটি বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের (খুলনা ও যশোর) স্থলভাগে অবস্থান করছে। এর প্রভাব থাকায় দেশের সমুদ্রবন্দরগুলো এবং দেশের উপকূলীয় এলাকায় জারি করা ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত বহাল রাখা হয়েছে।
একই সঙ্গে চার বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিও অব্যাহত থাকতে পারে। পাশাপাশি ফের চট্টগ্রামে পাহাড় ধসের আশঙ্কার কথাও জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।
আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন বলেন, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও কাছাকাছি এলাকায় অবস্থিত লঘুচাপটি বর্তমানে সুস্পষ্ট লঘুচাপে হিসেবে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে কাছাকাছি এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের উপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় বিরাজ করছে।
এই আবহাওয়াবিদ বলেন, স্থলভাগে উঠে আসায় সুস্পষ্ট লঘুচাপটি আর শক্তিশালী হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হওয়া সম্ভাবনা নেই। এটি আগামীকালকের মধ্যে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দিকে চলে যেতে পারে। এর প্রভাবে আগামী কয়েকদিন বৃষ্টি থাকবে।
তিনি আরও বলেন, সমুদ্রবন্দরগুলোতে জারি করা ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত আজকেও বহাল রাখা হয়েছে। অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোতে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও বরিশাল বিভাগে আজও অতিভারি বৃষ্টি হতে পারে।
এদিন সকাল ১১টার এক সতর্কবার্তায় আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, সুস্পষ্ট লঘুচাপের কারণে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে ও গভীর সঞ্চালনশীল (বজ্রমেঘ) মেঘমালা সৃষ্টি হচ্ছে। বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা উত্তর বঙ্গোপসাগর ও সমুদ্রবন্দরগুলোর উপর দিয়ে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে সতর্কবার্তায়।
একই সঙ্গে ভারী বর্ষণের সতর্কবাণীতে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বুধবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও ভারি (৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার) থেকে অতিভারি (৮৯ মিলিমিটারের বেশি) বৃষ্টি হতে পারে।
অতি ভারী বর্ষণের কারণে চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ী এলাকায় কোথাও কোথাও ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে বলেও সতর্কবাণীতে জানানো হয়েছে।
এদিকে বুধবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, ঢাকা ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। এ সময়ে সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে। বৃষ্টিপাতের এই প্রবণতা আগামী তিন দিন অব্যাহত থাকতে পারে বলেও পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে।
পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে, মঙ্গলবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় সিলেটে ৩৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর একদিন আগে রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ছিল ৩৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
সান নিউজ/এফএআর