জাহিদ রাকিব
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে দেয়া কঠোর লকডাউনের মধ্যেও অনেকেই বেরিয়েছেন রাস্তায়। অনেকে রাস্তায় মাক্স বিক্রি করছেন, কেউ করছেন মৌসুমি ফল। কেউ আবার গণপরিবহন বন্ধ থাকায় ভ্যানে করে যাত্রী নিচ্ছেন।
সোমবার (২৫ জুলাই) কঠোর লকডাউনের চতুর্থ দিনে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার সড়ক ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
এই রকম ফুটপাতের হকাররা বলছেন, সরকার যে বিধিনিষেধ দিয়েছে তারাও এর পক্ষে। তবে তাদের পেট চলবে কীভাবে? সংসার চলবে কীভাবে? সরকারের কোনো সাহায্য তাদের কাছে যাচ্ছে না। তারা বাধ্য হয়ে রাস্তায় আসছেন।
খিলাগাঁও বাজারের রাস্তার কোণাই মাস্ক বিক্রি করছিলেন শিশু অয়ন। অয়ন বলেন, ‘ঝুঁকি নিয়া বাইর হইছি ঠিকই, বিক্রি কই! মানুষ নাই বেচমু কার কাছে? আবার না বাইরাইয়াও তো উপায় নাই।
ঘরে অসুস্থ মা আছে তারে খাওন দেন লাগবো বলছিলেন অয়ন।
তালতলা গলিতে প্লাস্টিকের বিভিন্ন জিনিসপত্র বিক্রি করেন মো. হাসান। তিনি বলেন, ‘আমার দুই ছেলে, এক মেয়েসহ ৫ জনের সংসার। লকডাউনের কারণে বড় বিপদে পইড়া গেছি পরিবার নিয়া। ধার-দেনা কইরা কোনো রকম সংসার চালাইতাছি। কিছু সময় পর পর পুলিশ এসে আমাদের দৌড়াই। আবার চলে গেলে আমরা বসি।
যাত্রী নিয়ে মতিঝিল যাচ্ছেন ভ্যান চালক আজহার উদ্দিন। আক্ষেপের সাথে তিনি বলেন, সরকার তো লকডাউন দিয়াই শেষ। আমাগো জন্য কী করলো, আমাগো পেটে তো ভাত নাই। বাচ্চা-কাচ্চা আছে, মা-বাপ আছে। কাম করতে না পারলে কী খামু আমরা! সরকারের সাহায্য-সহযোগিতা তো দূরের কথা একটা দানা পর্যন্ত এহনও পাই নাই।
দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতি উদ্বেগজনক পর্যায়ে চলে যাওয়ায় গত কয়েক মাস ধরে বিধিনিষেধ আরোপ করে তা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে সরকার। ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে আটদিনের জন্য শিথিল করা হয়েছিলো বিধিনিষেধ। এরপর আবার গত শুক্রবার (২৩ জুলাই) সকাল ৬টা থেকে আগামী ৫ আগস্ট মধ্যরাত পর্যন্ত চলবে কঠোর বিধিনিষেধ।
বিধিনিষেধের মধ্যে বন্ধ আছে সব ধরনের গণপরিবহন, সরকারি ও বেসরকারি অফিস এবং শিল্পকারখানা। বন্ধ রয়েছে দোকান এবং শপিংমল। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষের বাইরে বের হওয়া নিষেধ করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
সান নিউজ/জেআই/এফএঅর