নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে দেশ আবার দুই সপ্তাহের লকডাউনে যাচ্ছে শুক্রবার। সেদিক থেকে রাজধানী থেকে যারা বাড়ি গিয়ে ঈদ করেছেন তাদের কর্মস্থল বা গন্তব্যে ফেরার বাড়তি তাগিদ রয়েছে। তবে বাস টার্মিনালগুলো ও সদরঘাটে দেখা যাচ্ছে ভিন্ন চিত্র। ঢাকা ফেরা যাত্রীর সংখ্যা একেবারেই কম। বরং এখনও চলছে ঢাকা ছাড়ার ধুম।
বৃহস্পতিবার (২২ জুলাই) সকাল থেকেই মহাখালী বাস টার্মিনাল ও সায়েদাবাদ টার্মিনালে মানুষের ঢল দেখা যায়। তাদের সবাই নিজ নিজ জেলায় ফিরছে।
নিম্ন আয়ের এসব মানুষ বলছেন, আবার লকডাউন শুরু হচ্ছে। তাই উপার্জনের উপায় না দেখে বিপদে পড়ার শঙ্কা থেকে ঢাকা ছেড়ে বাড়ি চলে যাচ্ছে তারা।
ইদ্রিস আলী। গ্রামের বাড়ি জামালপুরে। ঢাকার কামরাঙ্গীরচর থাকতেন পরিবার নিয়ে। ইজিবাইক চালিয়ে উপার্জন করতেন। তবে লকডাউনে ঘরে বসে থাকতে হবে বলে তিনি গ্রামে চলে যাচ্ছেন।
ইদ্রিস বলেন, ‘ইজিবাইক চালিয়ে খাই। দুইদিন পরপর লকডাউন দেয় সরকার। আমরা বাঁচব কেমনে? গরীব মানুষ। কেউ সাহায্যও করে না। ঢাকায় না খেয়ে থাকার থেকে বাড়ি গিয়ে কিছু একটা করে বাঁচতে পারব।’
ইজিবাইক কী করেছেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ইজিবাইক খুলে পার্ট পার্ট করে নিয়ে যাচ্ছি। বাড়ি গিয়ে ইজিবাইক চালাব। ঢাকা শহরে আর আসব না। করোনা আমাদের একদম মেরে ফেলল।’
এসব যাত্রীর সঙ্গে কোরবানির পশু বিক্রি করতে আসা অনেকেই বাড়ি ফিরছেন। ঈদ উপলক্ষে যারা মাংস কাটার কাজ করতে এসেছিলেন তারাও ফিরছেন।
কুমিল্লার যাত্রী ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘গরু নিয়ে আসছিলাম ঢাকায়। গরু বিক্রি করে ঈদের দিন কসাইয়ে কাজ করেছি। এখন বাড়ি যাচ্ছি। ভাবছিলাম দুইদিন আত্মীয়ের বাড়ি বেড়াব। লকডাউনের জন্য এখন বাড়ি যেতে পারলে বাঁচি।’
যাত্রী পরিবহনে মানা হচ্ছে না কোনো ধরনের স্বাস্থ্যবিধি। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী দুই সিটে একজন যাত্রী পরিবহনের বাধ্যবাধকতা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। বাস আসলেই হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন যাত্রীরা। অনেকের মুখে নেই মাস্কও। করোনাভাইরাসের বিষয়টিই মাথায় নেই তাদের।
ঈদের বিকেল থেকে মহাখালী টার্মিনালে ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া মানুষের চাপ আবার বেড়েছে বলে জানালেন সেখানে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশ বসির উদ্দিন।
গত ১ জুলাই থেকে টানা দুই সপ্তাহ শাটডাউনের পর কোরবানি ঈদ ও পশুর হাট আর ঘরমুখো মানুষের নির্বিঘ্ন যাত্রা বিবেচনায় ১৫ জুলাই থেকে তা শিথিল করে সরকার। এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপনে তখনই জানিয়ে দেয়া হয়, ২৩ তারিখ ভোর থেকে আবার ১৪ দিনের শাটডাউন দেয়া হবে।
ফলে যারা বাড়ি গিয়ে ঈদ আনন্দ উদযাপন করছেন তাদের কর্মস্থল বা নির্ধারিত গন্তব্যে ফিরে আসতে হবে শুক্রবার ভোর ৬টার মধ্যে।
সাননিউজ/জেআই/এমএইচ