নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর সদরঘাটের ঢাকা নদীবন্দরে লঞ্চগামী যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ করা গেছে। এ সময় যাত্রীরা কোনোরকম স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই লঞ্চে গাদাগাদি করে যাত্রী উঠিয়েছেন লঞ্চ মালিকরা। আবার সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা।
রোববার (১৮ জুলাই) ঢাকা সদরঘাট নদীবন্দরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
সূত্র জানায়, ঘরমুখো ভিড় এড়াতে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিওটিএ) প্রতিটি লঞ্চে ডেক যাত্রীদের জন্য ৩ফুট দূরত্বে চিহ্ন দিয়ে অতিরিক্ত যাত্রী বহন না করতে নির্দেশ দিলেও তা মানছে না কোনো লঞ্চ মালিক ও কর্মচারীরা। অন্যান্য ছুটির সময় যেমন গাদাগাদি করে যাত্রী তোলা হয়, এসময় অধিকাংশ যাত্রী মাস্ক ছাড়াই লঞ্চে আরোহন করতে দেখা গেছে।
নৌপরিবহন অধিদপ্তরের নীতিমালা অনুয়ায়ী একজন যাত্রীর জন্য সাড়ে ১৩ স্কয়ার ফুট জায়গা বরাদ্দ রয়েছে। এ হিসাব অনুযায়ী যাত্রী ধারণক্ষমতা নির্ধারণ করে সমুদ্র পরিবহন। কিন্তু এ হিসাবে যাত্রী পরিবহন করা হলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এক যাত্রী থেকে আরেক যাত্রীর শারীরিক দূরত্ব তিন ফুটের বেশি থাকার কথা। কিন্তু লঞ্চমালিকেরা কোনো নীতিমালারই ধার ধারছেন না। মহামারির স্বাস্থ্যবিধিকেও আমলে নিচ্ছেন না।
এদিকে দেশের ৪১টি নৌ রুটের প্রতিটি লঞ্চেই সরকারি প্রজ্ঞাপনের দোহাই দিয়ে ৬০ শতাংশ ভাড়ার স্থলে শতভাগ ভাড়া বৃদ্ধি করে দিয়েছে লঞ্চ মালিকরা। এতে যাত্রীদের ভোগান্তি আরো বেড়েছে।
যাত্রীরা অভিযোগ করে বলেন, স্বাভাবিক সময়ে চাদপুরে ভাড়া ছিলো ডেকে ১০০ টাকা, সিঙ্গেল কেবিন ছিলো ৪৮০ টাকা। সে অনুযায়ী এখন সরকার অর্ধেক যাত্রী নিয়ে ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়িয়ে নির্ধারণ করছে ১৬০ টাকা। কিন্তু লঞ্চ মালিকরা সে ভাড়া নিচ্ছে ১৮০-২০০ টাকা পর্যন্ত।
চাঁদপুরের উদ্দেশে লঞ্চে আসা মুকবুল নামের এক ব্যক্তিকে মাস্ক না থাকার কারণ জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ‘আমাদের মাস্ক লাগে না। এসব করোনা-টরোনা আমাদের ধরবে না। আর মাস্ক পরলে দম বন্ধ হয়ে আসে। তাই মাস্ক পরি না।’
ভোলা জেলার লঞ্চযাত্রী মো. সাব্বিরের মুখে মাস্ক না থাকার কারণ জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ‘মাস্ক পরলে মনে হয় নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যায়। আর মাস্ক পরেও কোন লাভ নেই। করোনা ধরলে এমনিতেই ধরবে। তাই মাস্ক পরি না।’
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহণ কর্তৃক (বিআইডব্লিউটিএ) এর যুগ্ম পরিচালক মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চয়তায় যাত্রীদের বার বার সতর্ক করা হচ্ছে। যাত্রীদের মাস্ক পরার কথা বলা হচ্ছে। এ ছাড়া যাত্রীদের স্বাস্থ্য সচেতনতায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, নৌ-পুলিশ, বিআইডব্লিউটিএ’র কর্মকর্তা কর্মচারীগণ এখানে উপস্থিত আছেন।
উল্লেখ্য, স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করলে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃক কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত কোনও ব্যক্তিকে স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করার কারণে নৌ-পরিবহণ কর্তৃপক্ষ কোনও ধরনের জরিমানা বা শাস্তি প্রধান করেননি। এমনকি স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘনের দায়েও এখন পর্যন্ত কোনও লঞ্চ চলাচল বন্ধ হয়নি।
সান নিউজ/এসএ