নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকার হাটগুলোতে দূরদূরান্ত থেকে কোরবানির পশু কিনতে ছুটে আসছে মানুষ। এ হাটে ছোট ও মাঝারি ধরনের গরু-ছাগলের চাহিদা বেশি দেখা গেছে। বড় গরুর দাম বেশি হওয়ায় সেদিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন ক্রেতারা। শনিবার (১৭ জুলাই) গাবতলী পশুর হাটে এমন চিত্র দেখা গেছে।
গাবতলী হাটসহ বেশ কয়েকটি হাট ঘুরে দেখা যায়, দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে নিয়ে আসা গরু-ছাগল হাটে তোলা হয়েছে। এখানে রয়েছে ছোট, মাঝারি ও বড় সাইজের গরু। অনেক ব্যাপারী ৫০ থেকে ৫০০টি গরু হাটে এনেছেন। অনেকে আবার নিজের লালন-পালন করা পশু বিক্রির জন্য এনেছেন। বাজারের মূল আকর্ষণ হচ্ছে বড় গরু। কিন্তু সেদিকে ক্রেতা খুব একটা ভিড় করছেন না। ছোট ও মাঝারি সাইজের গরু বেশি কিনতে দেখা গেছে।
এছাড়া গাবতলী হাটে ছাগলও তোলা হয়েছে। সাধ্যের মধ্যে থাকায় অধিকাংশ মধ্যবিত্তকে কোরবানির জন্য ছাগল কিনে নিয়ে যেতে দেখা গেছে।
করোনা মহামারিতে হাট বসলেও ক্রেতা-বিক্রেতাদের অনেকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখছেন না। অনেকে আবার মাস্ক ছাড়াই চলাফেরা করছেন।
এ হাটে আসা শাহাজাহান নামে এক ব্যাপারী জানান, তিনি ৩৩টি বড় গরু নিয়ে এ হাটে এসেছেন। দেড় থেকে চার লাখ টাকা পর্যন্ত গরুর দাম হাঁকছেন তিনি। এ পর্যন্ত একটিও তিনি বিক্রি করতে পারেননি।
শাহাজাহান জানান, বড় গরুর ক্রেতা নেই। যারা আসছেন তারা অনেক কম দাম বলে চলে যাচ্ছেন। গত দুদিনে একটিও বিক্রি করতে পারেননি। আগামীকাল ও পরশু থেকে বড় গরু বিক্রি শুরু হবে বলে আশা করছেন।
আফতাব নগর হাটে মাঝারি সাইজের গরু কিনতে এসেছেন ব্যাংকার ওয়াহিদ। যে গরুগুলো পছন্দ হচ্ছে তার দাম বেশি চাওয়ায় কিনতে পারছেন না। তিনি বলেন, তার গরু কেনার বাজেট ৭০-৮০ হাজার টাকা। অনেক ছোট গরুর দাম চাচ্ছে ৯০ থেকে এক লাখ টাকা। পুরো হাট ঘুরে বাজেটের মধ্যে পছন্দ হলে কিনব। না হলে পরে আবার আসব।
দেশি-বিদেশি ২৭টি বড় গরু নিয়ে মেরাদিয়া হাটে এসেছেন ব্যাপারী মো. আসাদ। তিনি বলেন, প্রতি বছর বড় সাইজের ২৫-৩০টি গরু বিভিন্ন জেলা থেকে সংগ্রহ করে গাবতলী এনে বিক্রি করি। এবারও গরু নিয়ে এসেছি।
এই ব্যাপারী তার গরুগুলোর দাম সাড়ে তিন থেকে ছয় লাখ টাকা পর্যন্ত চাচ্ছেন। এ পর্যন্ত তিনি আটটি গরু বিক্রি করেছেন। বাকি দুদিনের মধ্যে সবগুলো বিক্রি হয়ে যাবে বলে জানান তিনি।
এক লাখ সাত হাজার টাকা দিয়ে মাঝারি সাইজের ষাঁড় কিনেছেন আহসান হাবীব। দাম কিছুটা বেশি হলেও কয়েক ঘণ্টা ঘুরে দামাদামি করে কিনেছেন তিনি।
তিনি বলেন, গরু পছন্দ হয়েছে, তবে গত বছরের চাইতে দাম এবার কিছুটা বেশি। রোদ আর ভিড়ের মধ্যে ঘোরাফেরা করার ঝুঁকি রয়েছে। এ কারণে দাম একটু বেশি হলেও গরু কিনে বাসায় নিয়ে যাচ্ছি।
এদিকে পশুর হাটগুলোতে ছাগলও বেচাকেনা করতে দেখা গেছে। সাত থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত ছাগলের দাম চাওয়া হচ্ছে। মধ্যবিত্তরা গরুর বদলে ছাগল কিনতে আগ্রহী হচ্ছেন।
বেসরকারি চাকরিজীবী ইসমত আলী ২২ হাজার টাকা দিয়ে মাঝারি সাইজের দুটি ছাগল কিনেছেন। তার সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, গরু কেনার বাজেট নেই বলে দুটি ছাগল কিনেছেন কোরবানির জন্য। একটি ছাগল কেনার ইচ্ছা থাকলেও বাজেটের মধ্যে মিলে যাওয়ায় দুটি কিনেছেন। গত বারের চাইতে এবার ছাগলের দাম তেমন বাড়েনি বলেও জানান একাধিক ক্রেতা।
সাননিউজ/এমএইচ