নিজস্ব প্রতিবেদক:
করোনাভাইরাস সংক্রামণ প্রতিরোধে যেসব পেশার মানুষ সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছে পুলিশ বাহিনী তাদের মধ্যে অন্যতম। এই বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে করোনা সংক্রামণের হারও বেশি।
সর্বশেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, এক হাজার ১৫৩ জন পুলিশ সদস্য এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
৫ মে মঙ্গলবার রাতে পুলিশ সদর দফতরের জনসংযোগ ও গণমাধ্যম শাখার এ আই জি সোহেল রানা এক ভিডিও বার্তায় পুলিশ সদস্য বেশি আক্রান্ত হওয়ার কারণ ও ব্যাখ্যা তুলে ধরেন।
সোহেল রানা বলেন, পুলিশিং একটি ইউনিক প্রফেশন। এই প্রফেশনে থেকে সাধারণ মানুষের সঙ্গে মেশার যে সুযোগ রয়েছে, তা অন্য কোনও প্রফেশনে নেই। বর্তমান পরিস্থিতিতে এই দিকটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে। কোয়ারেন্টিন এবং আইসোলেশন নিশ্চিত করতে পুলিশকে মানুষের বাড়ি বাড়ি যেতে হয়েছে। এগুলো নিশ্চিতে মানুষের খুব কাছে যেতে হয়। রোগীকে হাসপাতালে নেওয়ার প্রয়োজন হলে তা পুলিশকেই করতে হচ্ছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে যানবাহনের একটু সংকট রয়েছে, তাই পুলিশের গাড়িতে করে রোগীদের পৌঁছে দিতে হচ্ছে। এমনকি তাদের চিকিৎসা নিশ্চিত করতেও পুলিশ কাজ করছে।
পুলিশ সদর দফতরের জনসংযোগ ও গণমাধ্যম শাখার এই কর্মকর্তা বলেন, দ্রব্যমূল্য, কালোবাজারি নিয়ন্ত্রণেও মানুষের খুব কাছে থেকে পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। ধর্মীয় কোনও অনুষ্ঠানে ব্যাপক মানুষের সমাগম, গার্মেন্টস কিংবা অন্য পেশার মানুষ যখন সমবেত হচ্ছেন, বিক্ষোভ করছেন সেই পাবলিক অর্ডার ম্যানেজ করতে মানুষের মাঝে যেতে হচ্ছে পুলিশকে। আসামিকে গ্রেফতার করতে খুব কাছ থেকে তাকে স্পর্শ করতে হয়। তা ছাড়া ধরা সম্ভব নয়। করোনায় কেউ মারা গেলে তার সৎকার, জানাজা, দাফনে পুলিশকে যেতে হচ্ছে। কিন্তু তাৎক্ষণিক নিজেদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না।
সোহেল রানা ভিডিও বার্তায় আরও বলেন, আমাদের কোনও সদস্য যখন আক্রান্ত হচ্ছেন, তখন অন্য সদস্যের মধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হচ্ছে। ‘ফোর্স’ যারা ব্যারাকে থাকেন, সেখানে স্বল্প স্পেসে থাকতে হচ্ছে। একসঙ্গে থাকা তাদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। চেষ্টা করা হচ্ছে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাদের নিরাপদ দূরুত্বে বিছানাসহ প্রয়োজনীয় সবকিছু দেওয়ার। তারপরও পেশাগত বৈচিত্র্যের কারণে বাড়তি কিছু ঝুঁকি থেকে যাচ্ছে। এসব কারণে পুলিশের করোনা সংক্রমণের হার বেশি।
তিনি বলেন, পুলিশ সদস্যরা দেশ ও মানুষকে ভালোবেসে ঝুঁকি নিচ্ছেন। সুরক্ষাসামগ্রী পেতে বিলম্ব হলেও তারা ঘরে বসে থাকছেন না।
উল্লেখ্য, দেশে এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৯২৯ জনে। এর মধ্যে মারা গেছেন ১৮৩ জন। আক্রান্তের সংখ্যার দিক দিয়ে আজই সর্বোচ্চ ৭৮৬ জনের শরীরে ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে। দেশে মোট শনাক্তের মধ্যে পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের এক হাজার ১৫৩ জন সদস্য রয়েছেন। মারা গেছেন পাঁচ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৮৫ জন।
সান নিউজ/সালি