নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রাণভয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিকদের দ্রুত নিজ দেশে ফেরানো হবে। একইসঙ্গে তাদের ন্যায়বিচার পাইয়ে দিয়ে এই সংকট সমাধান করা হবে। এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব জাতিসংঘে মানবাধিকার পরিষদের ৪৭তম অধিবেশনে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে প্রথমবার কোন প্রস্তাব বিনা ভোটে জাতিসংঘে গৃহীত হলো।
জেনেভার বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন সোমবার (১২ জুলাই) রাতে এ তথ্য জানিয়েছে। স্থায়ী মিশন জানায়, মানবাধিকার পরিষদে চলমান অধিবেশনে বাংলাদেশের উদ্যোগে ইসলামী সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) সব সদস্য রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ‘রোহিঙ্গা মুসলিম ও মিয়ানমারের অন্যান্য সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার পরিস্থিতি’ শীর্ষক প্রস্তাবটি পেশ করা হয়।
মিয়ানমারের পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটের শুরু থেকেই প্রস্তাবের বিভিন্ন বিষয়ে জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলোর মধ্যে প্রবল মতভেদ পরিলক্ষিত হয়। অবশেষে, নিবিড় ও সুদীর্ঘ আপস-আলোচনা শেষে প্রস্তাবটি আজ জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়।
এটি বাংলাদেশের কূটনৈতিক বিজয় উল্লেখ করে স্থায়ী মিশন জানায়, রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে প্রবেশের পর জেনেভার বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় এই প্রথম কোনো প্রস্তাব বিনা ভোটে জাতিসংঘে গৃহীত হলো। সে বিবেচনায় এবারের প্রস্তাবটি বাংলাদেশের জন্য একটি মাইলফলক।
গৃহীত প্রস্তাবে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে যৌন অপরাধসহ সব নির্যাতন, মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত ও দায়ী ব্যক্তিদের জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিচার ব্যবস্থার আওতায় আনা ও তদন্ত প্রক্রিয়া জোরদার করার প্রতি গুরত্বারোপ করা হয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত এবং আন্তর্জাতিক আদালতে চলমান বিচার প্রক্রিয়াকে সমর্থন জানানো হয়। এছাড়া প্রস্তাবটিতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে চলমান সব প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানিয়ে এরূপ পরিস্থিতিতে করণীয় নির্ধারণে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের এখতিয়ারের কথা পুনর্ব্যক্ত করা হয়।
প্রস্তাবে জাতিসংঘ মানবাধিকার হাইকমিশনারকে মিয়ানমার বিষয়ক ‘নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক তথ্যানুসন্ধানী মিশন’-এর সুপারিশসমূহ বাস্তবায়নের অগ্রগতির ওপর মানবাধিকার পরিষদ এবং জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে প্রতিবেদন উপস্থাপনের অনুরোধ জানানো হয়। এছাড়া এ প্রস্তাব গ্রহণের মধ্য দিয়ে রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের মূল কারণ বিষয়ে মানবাধিকার পরিষদে একটি প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সাননিউজ/এমআর