নিজস্ব প্রতিবেদক: আসন্ন ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে চলমান বিধি-নিষেধে কিছুটা শিথিলতা আনতে যাচ্ছে সরকার। এরমধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পশুরহাট বসানো, শপিংমল খুলে দেয়া এবং সিটি করপোরেশন ও জেলার ভেতর বাস চলার অনুমতি দেয়া হতে পারে বলে সূত্রে জানা গেছে। তবে দূরপাল্লার বাস ও যাত্রীবাহী লঞ্চ-ট্রেন বন্ধ রাখা হবে। আর ঈদের ছুটিতে কর্মস্থল ত্যাগ না করতে নির্দেশনা দেয়া হতে পারে।
রোববার (১১ জুলাই) দেশের আকাশে পবিত্র জিলহজ্জ মাসের চাঁদ দেখা যাওয়ায় আগামী ২১ জুলাই ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে। সার্বিক দিক বিবেচনায় চলমান বিধি-নিষেধ শেষে ঈদের সপ্তাহটিকেই গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।
সরকারি সূত্র বলছে, আগামী ১৪ জুলাই শেষ হচ্ছে দুই সপ্তাহের চলমান বিধি-নিষেধ। এই দুই সপ্তাহের ফলাফল দেখেই মূলত ঈদ সামনে রেখে মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনায় বিধি-নিষেধের শর্ত শিথিল করা হচ্ছে। তবে সবকিছুই নির্ভর করছে পরিস্থিতির উপর। আর ঈদের পর আবারও কঠোর বিধি-নিষেধ দেওয়া হতে পারে।
আসন্ন ঈদ সামনে রেখে চলমান বিধি-নিষেধের বিষয়ে সোমবারের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হতে পারে জানিয়ে সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তারা বলছেন, পরদিন মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) এসব নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন রোববার (১১ জুলাই) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, আগামী ১৪ জুলাইয়ের পর চলমান বিধিনিষেধ আবারও বাড়তে পারে, আমরা সেদিকেই গুরুত্ব দিচ্ছি।
তিনি বলেন, যে সংক্রমণ পরিস্থিতি, সেটি আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। বিধি-নিষেধ বাস্তবায়নের দিকেই সরকার বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। সংক্রমণ এবার এমনভাবে ছড়িয়েছে, সেটা খুবই আশঙ্কাজনক। ১৪ তারিখের পরের সময়ও আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদি আমরা এ সংক্রমণ কমাতে চাই, তাহলে এ প্রক্রিয়া কিন্তু অব্যাহত রাখতে হবে বিভিন্ন পর্যায়ে।
করোনা পরিস্থিতির উপর ঈদ সামনে রেখে সরকার সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
ঈদ উপলক্ষে চলমান বিধি-নিষেধে শিথিলতা আসবে কিনা- জানতে চাইলে সচিবালয়ে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের টেকনিক্যাল কমিটি যারা আছেন, তাদের পরামর্শে সরকার যদি মনে করে বিধি-নিষেধ এগিয়ে (বাড়ানো) নেওয়ার ব্যাপারে সেটিও হতে পারে। সবকিছুই এখন পরিস্থিতির উপর নির্ভর করছে। একটা কথা বারবার বলেছি আমাদের জীবনে ঈদ অনেকবার আসবে যদি আমরা বেঁচে থাকি। আমাদের এই অবস্থা থেকে বের হতেই বিধি-নিষেধ দেওয়া হয়েছে, সেটি সবার মানা উচিত।
ঈদে গণপরিবহন চালু হবে কিনা- সে প্রশ্নে তিনি বলেন, বিধি-নিষেধ চলমান থাকলে গণপরিবহন চলাচলের কোনো সুযোগ নেই। আর বিধিনিষেধ যদি প্রত্যাহার হয় সেটা কীভাবে প্রত্যাহার হবে, যদি সীমিত আকারে হয় সীমিত আকারেই চলবে। যদি পুরোপুরি উঠে যায় পুরোপুরিই চলবে। আমার মনে হয় যে পরিস্থিতি আছে সেখানে আমাদের পুরোপুরি স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাওয়ার মতো অবস্থায় পৌঁছাতে পারিনি।
সরকারি সূত্র আরও বলছে, আগামী ২১ জুলাই ঈদ উদযাপিত হলে ঈদের তিনদিনসহ সাপ্তাহিক দু’দিন মিলে পাঁচদিনের ছুটিতে সবাইকে কর্মস্থলে রাখতে সরকারের প্রচেষ্টা রাখা হবে।
করোনা মহামারির কারণে গত ১ জুলাই থেকে সরকারি বিধি-নিষেধে সকল সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্বশাসিত ও বেসরকারি অফিস বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বন্ধ রাখা হয়েছে গণপরিবহনসহ শপিংমল। মানুষের চলাচলেও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। আগামী ১৪ জুলাই এই বিধিনিষেধ শেষ হওয়ার আগেই নতুন সিদ্ধান্ত আসবে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
সান নিউজ/এমএম