নিজস্ব প্রতিবেদক: নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সজীব গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হাসেম ফুড লিমিটেডের জুস কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবুল হাসেমসহ আটজনের ১০ দিন রিমান্ড চেয়েছে পুলিশ। শনিবার (১০ জুলােই) তাদর ৮ জনকে গ্রেফতার করেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ। পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে আবুল হাসেমের চার ছেলে হাসিব বিন হাসেম, তারেক ইব্রাহীম, তাওসীব ইব্রাহীম ও তানজীম ইব্রাহীমও রয়েছেন। অন্য তিনজন হলেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহান শাহ আজাদ, হাসেম ফুড লিমিটেডের ডিজিএম মামুনুর রশিদ ও এডমিন প্রধান সালাউদ্দিন।
ডিআইজি হাবিবুর রহমান জানান, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় রূপগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। মামলা নং ১৯। মামলায় এই আটজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা লোকজনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিদের আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
শনিবার দুপুরে মামলার পর ওই আটজনকে গ্রেফতার করা হয় জানিয়ে রূপগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হুমায়ুন কবির মোল্লা বলেন, তাদের ১০ দিনের জন্য রিমান্ডে চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, সজীব গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবুল হাসেমসহ আট জনকে আটক করেছে পুলিশ। তিনি বলেন, এ ঘটনার পরপরই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এসব কিছুর পরই আমরা বলতে পারবো কেন, কোন কারণে এখানে ঘটনাটি ঘটেছিল। যাই ঘটুক এখানে হৃদয়বিধারক ও দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে। এখানে যারা ইন্তেকাল করেছে তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করছি। যারা আহত হয়েছে তারা সুস্থ হয়ে ফিরে আসবে। সরকারিভাবে যে সাহায্য-সহযোগিতা ডিসি তাৎক্ষণিকভাবে করেছে। এ ছাড়া, আমাদের আরও যা যা করার প্রয়োজন এ দুঃখলাঘব করার জন্য আমরা সব করবো।
তিনি বলেন, একটা দুর্ঘটনা ঘটেছে, একটা হত্যা হয়েছে। অনেকগুলো মানুষ মারা গেছে, মামলাতো হবেই। মামলা হবে, তদন্ত হবে। যদি কেউ সমান্যতম দোষী প্রমাণিত হয় তাদেরও বিচার হবে। তদন্তের আগে আমরা আর কিছু বলতে চাই না। তদন্ত শেষে অবশ্যই দোষীদের আইন অনুযায়ী বিচার হবে।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় সজীব গ্রুপের হাসেম ফুডস কারখানায় বৃহস্পতিবার অগ্নিকাণ্ড ঘটে, যাতে অর্ধ শতাধিক শ্রমিক-কর্মচারী প্রাণ হারিয়েছে। অগ্নিকাণ্ডের পর কারখানাটিতে ত্রুটিপূর্ণ অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা, জরুরি নির্গমন পথে তালা লাগানোর বিষয়টি প্রকাশ পায়। কারখানাটিতে শিশু শ্রমিক ব্যবহারের বিষয়টিও হয় প্রকাশ্য।
এর পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশের পক্ষ থেকে শনিবার আটজনকে আসামি করে হত্যা মামলা হয় বলে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আগুনে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ এনে ৩০২সহ কয়েকটি ধারায় এই মামলা হয়।
সান নিউজ/এফএআর