সান নিউজ ডেস্ক: হাশেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজের ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় স্বজনেরা লাশের অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গের সামনে। স্বজনদের কান্নায় ভারি ঢামেক এলাকা। আগুনে পুড়ে নিহত শ্রমিকদের ডিএনএ পরীক্ষার পর স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে। এর জন্য স্বজনদের ডিএনএ স্যাম্পল কালেকশন শুরু করেছে সিআইডি।
ঢামেক মর্গের পাশে ভিড়ের মধ্যে মুঠোফোনে কল আসে রাহিমা বেগমের। ফোনের অপর প্রান্তের স্বজনের প্রশ্নের জবাবে ফুঁপিয়ে কাঁদতে কাঁদতে রাহিমা বেগম বললেন, ‘লাশ আবার কী, লাশ তো নাই, বস্তায় কইরা খালি সব কয়লা আনছে। কারও লাশই নাকি চিনার উপায় নাই।’
শুক্রবার (৯ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ঢামেক মর্গের পাশের চিত্র এটি। রাহিমা বেগম লাশের অপেক্ষায় থাকা একজন। তার পুত্রবধূ আমেনা বেগমের (২২) লাশের অপেক্ষায় আছেন তিনি। ডিএনএ টেস্টের পর লাশ পাবেন। কিন্তু সেটা কখন, তা তারা জানেন না।
ভবনের চারতলায় কাজ করতেন আমেনা বেগম। ছয় হাজার টাকা বেতনের চাকরি আমেনার। স্বামী রাজীব হোসেন ও শ্বাশুড়ি রাহিমা বেগমও একই কারখানায় চাকরি করেন। তারা পৃথক ভবনে কাজ করায় প্রাণে বেঁচে গেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) বিকালে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সজীব গ্রুপের হাশেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের ভবনে আগুন লাগে। আগুনে পুড়ে কয়লা হয়ে গেছে ৪৯টি মৃতদেহ। শুক্রবার মৃতদেহগুলো উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে একটি লাশও শনাক্ত করা যায়নি। সিআইডির ফরেনসিক বিভাগ ডিএনএ টেস্টের জন্য হাড়, টিস্যু ও দাঁতের নমুনা সংগ্রহ করেছে।
এছাড়া স্বজনদের (স্বামী-স্ত্রী, বাবা-মা ও যাদের সঙ্গে সরাসরি রক্তের সম্পর্ক আছে) রক্ত ও সোয়াব (মুখের লালা) সংগ্রহ করছে সিআইডি। এখন পর্যন্ত ১০ জন স্বজনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
সিআইডির সহকারী ডিএনএ অ্যানালিস্ট আশরাফুল আলম গণমাধ্যমকে বলেন, বয়সের উপর নির্ভর করে স্বজনদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। কারও কাছ থেকে রক্ত এবং সোয়াব নেয়া হয়। এ ছাড়া মরদেহের উপর নির্ভর করে হাড়, টিস্যু ও দাঁতের নমুনা নেয়া হচ্ছে। ঢাকা মেডিকেলের মাধ্যমে সুরতহালের পর মরদেহগুলোর ডিএনএ সম্পর্কে বেসিক আছে তারপর পরীক্ষা করা হবে ল্যাবে।
এদিকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এ পর্যন্ত ৫৫ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আর হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।
সান নিউজ/এফএআর/এমআর