নিজস্ব প্রতিবেদক: নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জের হাসেম ফুড লিমিটেডের কারখানায় আগুনে হতাহতের সংখ্যা বৃদ্ধির কারণ হচ্ছে ভবনের ছাদ ছিলো তালাবদ্ধ। মানুষ ইচ্ছা করলেও বের হতে পারেনি বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স।
ফায়ার সার্ভিস জানায়, আগুন সাততলা ভবন পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। আগুন লাগার ঘটনায় পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
আগুনে পুড়ে এখন পর্যন্ত ৫২ জন শ্রমিকের মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করেছে ফায়ার সার্ভিস। এতে আহত হয়েছেন অর্ধশত। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ১৮টি ইউনিট। শুক্রবার দেড়টার দিকে উদ্ধারকর্মীরা কারখানার ভেতর থেকে মরদেহগুলো বের করে আনেন। নিহতদের অধিকাংশ নারী ও শিশু।
এদিকে সেখানে কর্মরত শ্রমিকদের আত্মীয়-স্বজনরা ভিড় করছেন তাদের সন্ধ্যানে। পরিচয় শনাক্তের জন্য মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হচ্ছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কর্ণগোপ এলাকায় হাশেম ফুডস অ্যান্ড বেভারেজ কারখানায় এ আগুন লাগে। খবর পেয়ে ডেমরা, কাঞ্চন, সিদ্ধিরগঞ্জ, আড়াইহাজার, নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকাসহ ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ শুরু করে।
ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক সিদ্দিক মোহাম্মদ জুলফিকার রহমান বলেন, একেকটি ফ্লোর ৩৫ হাজার স্কয়ার ফিটের। সিঁড়ি মাত্র দুটি। সিঁড়িতেও আগুন ছিল, ফলে অনেকে বের হতে পারেনি। আমরা পঞ্চম ও ষষ্ঠ তলায় যাওয়ার চেষ্টা করছি। অনেক বড় ফ্লোর এবং ভেতরে খোপ খোপ কক্ষ থাকায় আগুন নেভাতে সমস্যা হচ্ছে। এখনও ধোঁয়া ফলে, ছাদে উঠতেও ঝামেলা হচ্ছে।
আগুনের ঘটনায় শুক্রবার সকালে পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা দ্বিতীয়বারের মতো ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। এ সময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের সঙ্গে আবারও পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হলে পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা।
এদিকে বিক্ষুব্ধরা কারখানার গেট সংলগ্ন আনসার ক্যাম্প থেকে চারটি শটগান ছিনিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। এ ঘটনায় ব্যর্থ হয়ে শ্রমিকরা শটগান পাশের খালে ফেলে চলে যায়। এ ঘটনায় তিনটি শটগান পানি থেকে উদ্ধার করা গেলেও একটি উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
সান নিউজ/এফএআর