নিজস্ব প্রতিবেদক:
করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে যাদের আয়-উপার্জনের পথ নেই তাদের ঈদের আগেই নগদ আর্থিক সহায়তা দিতে চায় সরকার। যাতে মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়।
৪ মে সোমবার সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে সর্বশেষ করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে রংপুর বিভাগের ৮ জেলা প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে মতবিনিময়ে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এসময় ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত ছিল পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, রংপুর এবং গাইবান্ধা জেলা।
ভিডিও কনফারেন্সে রংপুর বিভাগের আটটি জেলার প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, সিভিল সার্জনসহ স্বাস্থ্যকর্মী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সশস্ত্র বাহিনীর প্রতিনিধি, রাজনীতিবিদ, শিক্ষক, ইমাম, ব্যাংকার, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজন সংযুক্ত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী ব্যাংক ঋণের সুদের টাকা দুই মাসের জন্য স্থগিত করার এবং সরকারি ছুটি আগামী ১৫ মে পর্যন্ত বর্ধিত করারও ঘোষণা দেন।
ঈদকে সামনে রেখে এবং পবিত্র রমজান উপলক্ষে সাধারণ ছুটিতে বন্ধ থাকা দোকান-পাট সীমিত আকারে চালু করার অনুমতি দেয়া হবে বলেও জানান শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, জনগণ ইফতার ও সেহরি করতে যাতে কোন সমস্যার সম্মুখীন না হয়, সেজন্য সরকার হাট-বাজার এবং দোকানপাট খোলা রাখার নির্দেশ দিয়েছে। এতে করে ঈদকে সামনে রেখে জনগণ কেনাকাটা করতে পারবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি জেলায়, বিভিন্ন জেলাভিত্তিক যেসব ছোটখাটো শিল্প রয়েছে, সেগুলো তারা চালাতে পারবেন। সেভাবে আমরা নির্দেশনা দিয়েছি।
তিনি বলেন, অর্থনীতির চাকা যাতে গতিশীল থাকে, মানুষকে সুরক্ষিত রেখে ও তাদের স্বাস্থ্যের দিকে নজর রেখে সেগুলো যেন পরিচালিত হতে পারে, সে জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নিতে বেশকিছু নির্দেশনা আপনারা শিগগিরই পাবেন।
তিনি বলেন, সরকারি অফিস-আদালত সব আমরা চালু করে দিচ্ছি। যাতে মানুষের কষ্ট না হয় এবং সামনে ঈদের আগে মানুষ যাতে কেনাকাটা বা যা যা দরকার সেটা যেন করতে পারে।
তার সরকার জনগণের যোগাযোগ এবং ডাক ব্যবস্থা কার্যকর রাখার স্বার্থে ধীরে ধীরে রেল যোগাযোগও চালু করবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা করে ব্যবসা-বাণিজ্য অব্যাহত রাখার জন্য সরকারের প্রায় ১ লাখ কোটি টাকার আর্থিক প্রণোদনা ঘোষণার পুনরুল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এই বরাদ্দের পরিমাণ দেশের জিডিপির ৩ দশমিক ৫ শতাংশ। কারণ, আমরা চাচ্ছি যারাই যেখানে যে ধরনের ব্যবসা-বাণিজ্য করছেন, তা যেন সচল রাখতে পারেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারের সামাজিক নিরাপত্তাবলয়ের কর্মসূচির সুবিধাগুলোর পাশাপাশি ৫০ লাখ লোক ১০ টাকা কিলোতে ওএমএস’র চাল কেনার যে সুযোগ পাচ্ছেন, যে সুবিধা ভোগীর সংখ্যা ১ কোটিতে উন্নীত করতে সরকার যে তালিকা প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে তার কাজও অনেক দূর এগিয়েছে।
শেখ হাসিনা তার ভাষণে সংকট কাটিয়ে ওঠার দৃঢ় প্রত্যয় পুণর্ব্যক্ত করে বলেন, সমস্যা আসবেই, আর তা মোকাবিলা করে এগিয়ে যেতে হবে।
তিনি আরো বলেন, আমরা প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করি। মনুষ্য সৃষ্ট সেই অগ্নিসন্ত্রাস থেকে শুরু করে নানা ধরনের দুর্যোগ মোকাবিলা করেছি। কাজেই এই করোনাভাইরাস দুর্যোগও আমরা ইনশাআল্লাহ কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবো।
সান নিউজ/সালি