সান নিউজ ডেস্ক: দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর-বাড়ি ভেঙে পড়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভেঙে পড়া কিছু ঘরের ছবি এবং তথ্য প্রকাশ হয়েছে সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে। অভিযোগকে গুরুত্ব দিয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর-বাড়ি পরিদর্শনে নামছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের (পিএমও) একাধিক টিম।
শুক্রবার (৯ জুলাই) সকাল থেকে টিমগুলো পরিদর্শনে বের হবে বলে জানিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্র।
সূত্র জানায়, করোনা মহামারীর কঠোর বিধি-নিষেধের মধ্যেও শুক্রবার সকাল থেকে সারা দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলাকে ভাগ করে পরিদর্শন শুরু করবে ৫টি টিম। পরিদর্শনকারী টিমগুলোকে বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় নির্মিত এবং নির্মাণাধীন বাড়িগুলোর নির্মাণশৈলী ও গুণগতমান অনুমোদিত ডিজাইন ও প্রাক্কলন অনুযায়ী হয়েছে কিনা তা যাচাই করে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উচ্চ পর্যায়ের ৫টি টিমের একটিতে নেতৃত্ব দেবেন আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের পরিচালক মো. মাহবুব হোসেন। ঢাকা, রাজশাহী, সিলেট, রংপুর, ময়মনসিংহ বিভাগের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় নির্মিত ঘরগুলো পরিদর্শন করবে এসব টিম।
আশ্রায়ন-২ প্রকল্প পরিচালক মো. মাহবুব হোসেন এ সম্পর্কে বলেন, আমাদের কাছে প্রতিটি কেসই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ প্রতিটি বাড়ির সঙ্গে একেকটি পরিবারের স্বপ্ন জড়িত। এজন্যই এ রকম একটি মহামারি পরিস্থিতির মধ্যেও আমরা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে পরিদর্শনে নামছি।
তিনি বলেন, আশ্রয়ন প্রকল্প প্রধানমন্ত্রীর সর্ববৃহৎ মানবিক প্রকল্প। এ প্রকল্পের অনিয়ম বা গাফলতি নিয়ে আমাদের অবস্থান শুরু থেকেই জিরো টলারেন্স। ইতোমধ্যে যে সব জায়গা থেকে অভিযোগ এসেছে সেসব জায়গায় প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। একই সঙ্গে আমরা যে সব বাড়ি নির্মাণ নীতিমালা হয়নি সেসব বাড়ি সংস্কার অথবা পুর্ননির্মাণ যা যা প্রয়োজন সব কিছু করে দেবো।
প্রকল্প পরিচালক বলেন, অনেক জায়গায় অতি বৃষ্টি, বন্যা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগে কিছু কিছু বাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। আমরা সেসব জায়গায় পুনরায় বাড়ি নির্মাণ অথবা সংস্কার করে দিচ্ছি। তবে এই মানবিক প্রকল্প, প্রধানমন্ত্রীর ড্রিম প্রজেক্টকে বিতর্কিত করতে একটি সংগবদ্ধ মহল এটা নিয়ে অপপ্রচারে লিপ্ত আছে যেটি কাম্য নয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ওপর আস্থা রাখুন। ভূমিহীন-গৃহহীন সবাইকে বাড়ি নির্মাণ করে দেওয়া হবে।
সূত্র জানায়, ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর নির্মাণে অনিয়ম, অবহেলা ও অর্থ আত্মসাৎকারীদের ব্যাপারে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিতে এগোচ্ছে সরকার। অভিযোগ তদন্ত করে অনিয়মকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে সরকার। ইতোমধ্যে ৫ জন সরকারি কর্মকর্তাকে ওএসডি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের স্লোগান হলো- ‘আশ্রয়ণের অধিকার, শেখ হাসিনার উপহার’। প্রকল্পটি প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প। এর সঙ্গে আমাদের সবার আবেগ জড়িয়ে আছে। তাই প্রকল্পটি বাস্তবায়নে কোনো ধরনের ক্রটিবিচ্যুতি, অনিয়ম, দুর্নীতি ও শৈথিল্যের ঘটনা কোনোভাবেই মেনে নেয়া হবে না। অনিয়ম ও অবহেলার প্রমাণ পাওয়া গেলে শাস্তি পেতেই হবে। কাউকেই বিন্দু পরিমাণ ছাড় দেয়া হবে না।
‘অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নে শেখ হাসিনা মডেল’ বাস্তবায়নে আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় এ পর্যন্ত সর্বমোট ১ লাখ ১৮ হাজার ৩৮০টি পরিবারকে ২ শতাংশ খাস জমিসহ দুই কক্ষ বিশিষ্ট আধা পাকা বাড়ি প্রদান করা হয়েছে।
‘বাংলাদেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দেশে ২ লাখ ৯৩ হাজার ৩৬১টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার এবং জমি আছে ঘর নাই অথবা অত্যন্ত জরাজীর্ণ ঘর এ রকম ৫ লাখ ৯২ হাজার ২৬১টি পরিবারের তালিকা করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সকলকে বাড়ি নির্মাণ করে দেবে সরকার। সূত্র : বাসস
সান নিউজ/এমআর