চট্টগ্রাম ব্যূরো :
চট্টগ্রামের হালদা নদীতে ভেসে উঠল বিপন্ন প্রজাতির আরো একটি ডলফিন। সেটিকে মাটি চাপা দেওয়া হয়েছে বলে জানান হালদা রিসার্চ ল্যাবরেটরির সমন্বয়ক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরিয়া। মঙ্গলবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন তিনি।
ড. মনজুরুল কিবরিয়া জানান, দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদার চানখালী এলাকা থেকে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মৃত ডলফিনটি উদ্ধার করে এলাকাবাসী। সাড়ে সাত ফুট লম্বা ডলফিনটির ওজন ১২০ কেজি। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর থেকে এ পর্যন্ত এটি নিয়ে হালদায় ২৯টি ডলফিনের মৃত্যু হলো। এগুলোর বেশির ভাগের গায়ে আঘাতের চিহ্ন ছিল।
ড. মনজুরুল বলেন, ‘ এবারের মৃত ডলফিনটি আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেছি। সেটির শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন ছির না। এটি একটি প্রাপ্তবয়স্ক ডলফিন। ধারণা করছি, বয়সের কারণে ডলফিনটির মৃত্যু হয়েছে। মানে স্বাভাবিক মৃত্যু। তাই মৃত ডলফিনটি হালদা পাড়ে মাটিচাপা দেয়া হয়েছে।’
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, হালদায় যে ডলফিন দেখা যায়, তা স্থানীয়ভাবে উতোম বা শুশুক নামে পরিচিত। মিঠাপানির স্তন্যপায়ী এই প্রাণী গেঞ্জেস বা গাঙ্গেয় ডলফিন। সাধারণত দূষণমুক্ত পরিষ্কার পানিতে এটি বিচরণ করে।
চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার ছত্তার খালের মুখ থেকে হাটহাজারী উপজেলার মদুনাঘাট পর্যন্ত নদীর প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকা ডলফিনের মূল বিচরণক্ষেত্র। ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচারের (আইইউসিএন) লাল তালিকাভুক্ত অতি বিপন্ন প্রজাতির মিঠাপানির ডলফিন। সংস্থাটির মতে, বিশ্বের বিভিন্ন নদীতে এ জাতীয় ডলফিন আছে মাত্র ১ হাজার ১০০টি।
হালদা রিসার্চ ল্যাবরেটরির জরিপে দেখা গেছে, হালদায় ডলফিন ছিল ১৭০টি। যান্ত্রিক নৌযান ও বালুবাহী ড্রেজারের ডুবে থাকা যান্ত্রিক পাখার আঘাতে ডলফিনগুলো ক্রমেই মারা যাচ্ছে।
সান নিউজ/আইকে