জাহিদ রাকিব
শাহবাগ মোড়ে খালি জায়গাটায় ভাসমান দোকান গড়ে উঠেছে। এখানেই মৌসুমী ফল বিক্রি করেন খোরশেদ আলম। তার সংসারের আয়ের একমাত্র উৎস এই ক্ষুদ্র ব্যবসাটাই। মেডিকেলে আসা রোগীরা ও পথচারীসহ বিভিন্ন পেশার শ্রমিকরাই তার ক্রেতা। তার পরিবারের সদস্যরা থাকেন সিলেটে গ্রামের বাড়িতে। সামান্য দোকান করে তার মেসভাড়া ও খাবার খরচ ৩০০ টাকা দিতে হয়। বাকি অল্প কিছু টাকা গ্রামের বাড়িতে বউ-পোলাপানকে পাঠান তিনি।
লকডাউনে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় হাসপাতালে রোগী আসা কমে গেছে। আর পথচারীর আনাগোনা কমেছে লকডাউনে। এতে তার বেচাকেনা কমেছে কয়েকগুণ। নিজের খরচ ওঠাতে শত দায়, বউ-পোলাপানের জন্য আর কি পাঠাবো বললো-খোরশেদ।
রোববার (৪ জুলাই) দুপুরে নিজের জীবন-জীবিকা নিয়ে এভাবে হতাশা প্রকাশ করলেন ভ্রাম্যমাণ মৌসুমী এই ফল ব্যবসায়ী।
রাজধানীর ধানমন্ডির ৬/এ সড়কের ফুটপাতে ভাত বিক্রি করেন মনিরুল ইসলাম। বিধিনিষেধ আরোপের দিন থেকে ব্যবসা চলছে ‘চোর-পুলিশ খেলা’র মতো- জানান তিনি।
মনিরুল বলেন, এখানে রিকশা চালকরা ও বিভিন্ন পেশার শ্রমিকরাই তার ক্রেতা। করোনার সময়টাতে তার ব্যবসা চালিয়ে নেয়াটা কঠিন হয়ে পড়েছে। পুলিশ এসে কতক্ষণ পর পর উঠায়ে দিচ্ছে।
সাইন্সল্যাব এলাকায় ফুটপাতে অস্থায়ীভাবে বসে চা-সিগারেট বিক্রি করে মামুন। তাকে লকডাউনে কেন বাসা থেকে বের হয়ছেন? এমন প্রশ্নে মামুন বলেন, কয়দিন পর পর সরকার লকডাউন দেয়। ঘরে খাবার নাই, তাই রাস্তায় নামছি।
তিনি আরও বলেন, আমাগো খাওনের ব্যবস্থা না কইরা দোকান বন্ধ করেন। খাওনও দিবেন না আবার দোকানও করতে দিবেন না এইটা কেমন বিচার?
লকডাউন হলেই এই ধরনের ছোট ও ভাসমান ব্যবসায়ীরা পড়েন সব থেকে বেশি বিপাকে। বিগত লকডাউনগুলোতে অনেকেই জমানো টাকা খরচ করে ফেলেছেন। তাদের কাছে এখন শুধু ‘ব্যবসা করা মনোভাবটাই’ রয়েছে; লাভের মুখ কমেই দেখছেন। আবার অনেকেই বিগত লকডাউনে নিঃস্ব হয়ে ধার করে আবার ব্যবসা শুরু করেছেন।
এমন পরিস্থিতিতে এসব ব্যবসায়ীদের জন্য প্রাথমিকভাবে খাদ্য নিশ্চিত করার কথা বলছেন অর্থনীতিবিদরা। তবে এভাবে বেশি দিন চলতে থাকলে দেশের অর্থনীতির ভবিষ্যৎ বেসামাল হয়ে যাবে বলেও আশঙ্কাও প্রকাশ করেন তারা।
সাননিউজ/জেআই/এফএআর