নিজস্ব প্রতিবেদক: আবারো পুরোদমে শুরু হবে গণটিকাদান। গত কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে দেশে এসেছে ৪৫ লাখ ডোজ কোভিড-১৯ টিকা। এখন পর্যন্ত প্রায় ৪৩ লাখ ব্যক্তিকে টিকা দেয়া হয়েছে। বাকি ৪৫ লাখ ডোজ দিয়ে সাড়ে ২২ লাখ মানুষের টিকা দেয়া সম্ভব হবে। চারটি ফ্লাইটে শুক্রবার (২ জুলাই) রাত, শনিবার (৩ জুলাই) ভোর এবং সকালে ৪৫ লাখ টিকা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায়।
শুক্রবার রাতে দুটি ফ্লাইটে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি মডার্নার তৈরি ১৩ লাখ এবং চীনের সিনোফার্মের ১০ লাখ ডোজ টিকা আসে। শনিবার ভোর সাড়ে ৫ টায় একটি এবং বেলা পৌনে ৯টায় আরেকটি ফ্লাইটে বাকি টিকা এসেছে বলে জানিয়েছেন বিমানবন্দরের দায়িত্বরত স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সাজ্জাদ হোসেন।
চীন থেকে সিনোফার্মের যে দেড় কোটি ডোজ টিকা কিনছে বাংলাদেশ, তার অংশ হিসেবে এসব টিকা এসেছে। আর মডার্নার টিকা বাংলাদেশ পেয়েছে টিকার আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম কোভ্যাক্সের আওতায় বিনামূল্যে।
টিকার দুটি চালান বুঝে নেয়ার পর রাতে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সাংবাদিকদের বলেন, টিকার সংকটে দেশে গণটিকাদান কর্মসূচিতে ছন্দপতন হয়েছিল। এসব টিকা আসায় গণটিকাদান কর্মসূচি আবারও গতি পাবে। ডিসেম্বর নাগাদ বাংলাদেশ বিভিন্ন উৎস থেকে ১০ কোটি ডোজ টিকা পাবে বলে আশাবাদী স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, আগামী বছরের প্রথম তিন মাসের মধ্যে বা তার পরে জনজন অ্যান্ড জনসন থেকে আরও সাত কোটি ডোজ টিকা পাওয়া যাবে।
টিকা পাওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম বলেন, গণটিকাদান এবার ‘পুরোদমে’ শুরু হবে।
কোভ্যাক্সের আওতায় মডার্নার ১৩ লাখ ডোজ টিকা নিয়ে রাত ১১টা ১৩ মিনিটে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট বিমানবন্দরে নামে।
বিশ্বজুড়ে টিকা সরবরাহের আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম কোভ্যাক্স এর আগে ফাইজারের তৈরি এক লাখ ৬২০ ডোজ করোনাভাইরাসের টিকা দিয়েছে বাংলাদেশকে, যা ৩১ মে দেশে পৌঁছায়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনস অ্যান্ড ইমিউনাইজেশনস বা গ্যাভি এবং কোয়ালিশন ফর এপিডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস ইনোভেশনসের গড়া প্ল্যাটফর্ম হলো কোভ্যাক্স, যা বিশ্বের সব মানুষের সংক্রামক রোগের প্রতিষেধক পাওয়া নিশ্চিত করতে গড়ে তোলা হয়েছে।
মডার্নার টিকা আসার ঘণ্টা দেড়েক পর বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে চীন থেকে কেনা সিনোফার্মের তৈরি করোনাভাইরাসের টিকার ১০ লাখ ডোজ ঢাকায় পৌঁছায়।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, এ মাসে সিনোফার্মের ২০ লাখ ডোজ টিকাই পাচ্ছে বাংলাদেশ।
“আগামী মাসে আরও বেশি টিকা আসবে বলে আমরা আশা করছি। সেটা ৩৫ থেকে ৪০ লাখ ডোজ হতে পারে।
এর আগে চীনের উপহার হিসেবে গত ১২ মে ৫ লাখ ডোজ এবং ১৩ জুন ৬ লাখ ডোজ সিনোফার্মের টিকা ঢাকা পৌঁছায়। এবারের টিকা এসেছে সরকারের সঙ্গে টিকা কেনা চুক্তির আওতায়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন গত ২৫ মে জানিয়েছিলেন চীন থেকে দেড় কোটি ডোজ টিকা কেনা হবে।
দুদিন পর ২৭ মে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় সিনোফার্মের প্রতি ডোজ ১০ ডলার দরে দেড় কোটি ডোজ টিকা কেনার প্রস্তাবে অনুমোদন দেয় সরকার।
দুই মাসের বেশি সময় পর বৃহস্পতিবার চীনা কোম্পানি সিনোফার্ম ও যুক্তরাষ্ট্রের ফাইজারের তৈরি করোনাভাইরাসের টিকা নিয়ে সারা দেশে এরই মধ্যে নতুন করে গণ টিকাদান শুরু হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ঢাকায় সিনোফার্মের টিকা দেওয়া হচ্ছে ৪০টি কেন্দ্রে। আর ফাইজারের টিকা দেওয়া হচ্ছে সাতটি কেন্দ্রে।
সাননিউজ/এফএআর