সান নিউজ ডেস্ক: করোনা সংক্রমণ রোধে কঠোর বিধিনিষেধের প্রথম দিনে বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হওয়ায় রাজধানীতে ৫৫০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
২৫৮ জনকে নিয়মিত মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ২১২ জনকে জরিমানা করা হয়েছে। মুচলেকা দিয়েছেন ৩৯১ জন। এদের মধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাজা দেওয়া হয়েছে আটজনকে।
ডিএমপির মিডিয়া ও পাবলিক রিলেসন্স বিভাগের এডিসি মো. ইফতেখায়রুল ইসলাম জানান, এদিন মোট জরিমানা করা হয়েছে ৪ লাখ ৯২ হাজার ৫০৭ টাকা। এরমধ্যে ট্রাফিক বিভাগ ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৫০ টাকা জরিমানা করেছে। মামলা হয়েছে ২৭৪টি। গাড়ি আটক করা হয়েছে ছয়টি, রেকারিং করা হয়েছে ৭৭টি।
তিনি জানান, সরকারি নির্দেশনা প্রতিপালনে সকাল থেকে একযোগে ডিএমপির ক্রাইম, ট্রাফিক ও গোয়েন্দা ডিভিশন মাঠে কাজ করেছে। পাশাপাশি প্রত্যেকটি বিভাগেই ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে পরিচালনা করা হয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) সকাল থেকে রাজধানীর রমনা, লালবাগ, মতিঝিল, ওয়ারী, তেজগাঁও, মিরপুর, গুলশান, উত্তরার বিভিন্ন এলাকায় পুলিশের বিভিন্ন চেকপোস্ট, তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদ কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণরোধে বৃহস্পতিবার ভোর ৬টা থেকে শুরু হওয়া সপ্তাহব্যাপী কঠোর লকডাউন বাস্তবায়ন করতে মাঠে ব্যাপক তৎপর রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে চেকপোস্ট বসিয়ে যানবাহনে তল্লাশি ও পথচারীদের বাইরে বের হওয়ার কারণ জিজ্ঞাসা করছে পুলিশ।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. সাজ্জাদুর রহমান সকালে জানান, তিনি নিজেও সকালে রাস্তায় বের হয়ে বিভিন্ন স্থানে দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের তদারকি করেছেন।
তিনি জানান, অতিপ্রয়োজনীয় যানবাহন, রিকসা ও পণ্যবাহী গাড়ি ছাড়া সব ধরনের গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে। প্রয়োজন ছাড়া কাউকে রাস্তায় বের হতে দেখা যায়নি।
ডিসি জানান, সকাল ৬টা থেকে পুলিশ ঢাকা শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে চেকপোস্ট বসিয়েছেন। প্রতিটি চেকপোস্টে ৮ থেকে ১২ জন পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন। তাদের মধ্যে ডিসি পর্যায়ের কর্মকর্তারাও সকাল থেকে মাঠে থেকে লকডাউন বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, রাজধানীতে সব ধরনের বিপনিবিতান, অলিগলির মার্কেট ও দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। শুধুমাত্র কাঁচাবাজার ভেতর থেকে খোলা জায়গায় বসানো হয়েছে।
এরআগে করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধে সরকার ঘোষিত বিধি-নিষেধ(লকডাউন) কঠোরভাবে প্রতিপালনে মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ।
বুধবার বিকেলে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে ভার্চ্যুয়ালি সব মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, রেঞ্জ ডিআইজি, জেলা পুলিশ সুপার ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) সব ইউনিট প্রধানদের এ নির্দেশনা দেন তিনি।
আইজিপি সরকারি বিধি-নিষেধ চলাকালে সবাইকে ঘরে থাকার আহ্বান জানান। একইসঙ্গে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী জরুরি প্রয়োজনে ঘরের বাইরে বের হতে হলে অবশ্যই মাস্ক পরিধানসহ ও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের অনুরোধ করেন।
১ জুলাই থেকে রাজধানীতে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বের হলেই কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম।
করোনাভাইরাসজনিত রোগ (কোভিড-১৯) এর বিস্তার রোধকল্পে বৃহস্পতিবার সকাল ৬ টা থেকে ৭ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত সার্বিক কার্যাবলী ও চলাচলে বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। সপ্তাহব্যাপী জারিকৃত এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে মাঠে কাজ করবে ডিএমপি। বুধবার (৩০ জুন) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান ডিএমপি কমিশনার।
মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া কেউ বের হলে তাকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে। নির্দেশনা বাস্তবায়নে মাঠ পর্যায়ে অত্যন্ত কঠোর অবস্থানে থাকবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। বিধিনিষেধ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে দন্ডবিধির ২৬৯ ধারা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সান নিউজ/এমআর