চট্টগ্রাম ব্যূরো :
লকডাউন নয়, এবার বৃষ্টিতেই স্থবির হয়ে পড়েছে চট্টগ্রামের নগরজীবন। হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে দেশের দ্বিতীয় প্রধান এই মহানগরে।
বুধবার (৩০ জুন) সন্ধ্যা ৬টা থেকে বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) সকাল পর্যন্ত টানা বৃষ্টিতে কোথাও হাটৃু আাবার কোথাও কোমর পানিতে ডুবে যায় চট্টগ্রাম মহানগরীর দুই-তৃতীয়াংশ এলাকা। মাঝরাতে অনেক পরিবারে সবাই যখন ঘুমে, তখন পানি ঢুকে যায় ঘরের ভেতরে।
গুরুত্বপূর্ণ সড়ক থেকে ঘরবাড়িও পানিতে থই থই করছে এখন। নগরীর বেশিরভাগ খাল ও নালা ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানি নামারও সুযোগ হচ্ছিল না। অনেক খাল পরিষ্কারই করা হয়নি। তাই বৃষ্টি হলেই পানি উঠে যাচ্ছে ঘরবাড়িতে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়ে বিপুলসংখ্যক মানুষ।
বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত চট্টগ্রাম নগরীর হালিশহর, বাকলিয়া, মুরাদপুর, ষোলশহর ২ নম্বর গেট, চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ, চান্দগাঁও আবাসিক এলাকা, কাপাসগোলা, হামজারবাগ, অক্সিজেন, বহদ্দারহাট, চকবাজার, মোহাম্মদপুর, শুলকবহর, আগ্রাবাদ সিডিএসহ আরও বেশকিছু এলাকায় জলাবদ্ধতার খবর জানান স্থানীয়রা।
তাদের মতে, ওইসব এলাকা হাঁটু পানিতে ডুবে গেছে বুধবার মধ্যরাতেই। কোনো কোনো এলাকায় পানি উঠে যায় কোমরসমান। টানা ভারী বৃষ্টি হওয়ায় সেই পানি আর নামেনি। বরাবরের মতোই হালিশহর এলাকা ছাড়াও জলাবদ্ধতার সবচেয়ে বেশি শিকার হয়েছে মুরাদপুর। মুরাদপুর ফ্লাইওভারের নিচে যেন শুধুই পানির বন্যা।
চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) প্রায় ৭ হাজার ৯২৬ কোটি টাকায় দুটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এর মধ্যে ৫ হাজার ৬১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়ন হচ্ছে ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ প্রকল্প। অন্যদিকে দুই হাজার ৩১০ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়ন করছে ‘কর্ণফুলী নদীর তীর বরাবর কালুরঘাট সেতু হতে চাক্তাই খাল পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ’ প্রকল্প।
সিডিএ সেনাবাহিনীর মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। ২০১৭ সালে নেওয়া প্রকল্পটি ২০২০ সালের জুন মাসে সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ২০২০ সালের জুনে প্রকল্প মেয়াদ দুই বছর বাড়ানোর জন্য প্রস্তাব করা হয়। সরকার এক বছর মেয়াদ বাড়ায়। এরপর আবার নতুন করে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। যদিও ৫ হাজার ৬১৬ কোটি ৪৯ লাখ ৯০ হাজার টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়নাধীন জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পটির কাজ অর্ধেকও সম্পন্ন হয়নি। তবে ১৭০০ কোটি টাকা ইতিমধ্যে ব্যয় হয়ে গেছে। কিন্তু তিন বছরেও এর কোনো সুফল পায়নি চট্টগ্রাম নগরবাসী।
সান নিউজ/ আইকে