নিজস্ব প্রতিবেদক:
তথ্যমন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, 'সংবাদমাধ্যম ও সরকার, আমরা আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করব। যেহেতু আমাদের সম্মিলিত লক্ষ্য জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া, তাই আমাদের সবার একযোগে কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। একইসঙ্গে দুর্যোগের মধ্যে আশা জাগানিয়া সংবাদ পরিবেশন করে মানুষকে জীবন সংগ্রামে টিকিয়ে রাখার মনোবল যোগাতেও সংবাদমাধ্যমের প্রতি আহ্বান করছি।'
বৃহস্পতিবার (৩০ এপ্রিল) সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব) প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন। এসময় তথ্যসচিব কামরুন নাহার, নোয়াব সভাপতি একে আজাদ ও অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যদের মধ্যে মতিউর রহমান, মাহফুজ আনাম, তারিক সুজাত, শাহ হোসেন ইমাম, নঈম নিজাম, আলতামাশ কবির মিশু ও সাইফুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, 'আশাই মানুষকে ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যায়। আশাই মানুষকে জীবন সংগ্রামে টিকিয়ে রাখে। সেজন্যই আমি সেই সংবাদগুলো প্রকাশের অনুরোধ জানাব, যেগুলো মানুষের মাঝে আশা জাগাবে; মানুষকে জানাবে, আগামীতে সব অন্ধকার কেটে গিয়ে সুদিন আসবে।'
সংবাদপত্র মালিকদের উদ্দেশে তথ্যমন্ত্রী বলেন, 'আপনারা চেষ্টা করবেন, যাতে করে ইতিবাচক সংবাদগুলো বেশি করে আসে। এই সময়ে ইতিবাচক সংবাদগুলো খুব জরুরি। কারণ হতাশাগ্রস্ত, শঙ্কিত মানুষ ভবিষ্যৎ নিয়ে ভীষণভাবে চিন্তিত। এই সময়ে মানুষকে আশাবাদী করে তোলা আমাদের দায়িত্ব। এছাড়া আন্তর্জাতিক মাধ্যমেও অনেক সময় নেতিবাচক সংবাদ আসে, যেগুলো অনেক সময়ই বাস্তব চিত্রের সঙ্গে মিলে না। আমি দেখেছি, গতকাল বিদেশি গণমাধ্যমে এমন একটি সংবাদ এসেছে। যেটি এখানে অনেক পত্রিকায়ই ছাপা হয়নি। এ জন্য আপনাদের ধন্যবাদ জানাই।'
নোয়াব সভাপতি একে আজাদ তার বক্তব্যে সরকারি ক্রোড়পত্রসহ বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের বকেয়া বিল যাতে সংবাদপত্রগুলো দ্রুত পেতে পারে, সেজন্য তথ্য মন্ত্রণালয়কে আরও জোরালো ভূমিকা নেবার অনুরোধ করেন। একইসঙ্গে সংবাদপত্রের জন্য ব্যাংক ঋণ সুবিধা ও সংবাদপত্রের হকার, পরিবহন শ্রমিক ও এজেন্টদের জন্য আর্থিক প্রণোদনার বিষয়গুলো সুবিবেচনার দাবি জানান।
এ পরিপ্রেক্ষিতে তথ্যমন্ত্রী বলেন, 'সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে সংবাদপত্রের যে বকেয়া আছে, সেগুলো পরিশোধের জন্য ইতিমধ্যেই মন্ত্রিপরিষদ থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। যাতে সব মন্ত্রণালয় সংবাদপত্রের বকেয়া পরিশোধ করে। সেটির পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনে আমরা আগামী সপ্তাহে আমাদের মন্ত্রণালয় থেকে আরেকটা তাগিদপত্র সব মন্ত্রণালয়ে দেব।'
ড. হাছান বলেন, 'আপনারা সংবাদপত্র পরিচালনা করার জন্য যে ঋণের কথা বলেছেন, সে বিষয়েও আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে কথা বলব। যেহেতু সংবাদপত্র আমার দৃষ্টিতে একটি সার্ভিস সেক্টর। আপনারা শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে শিল্প হিসেবেও কিছু সুবিধা পান। পাশাপাশি সার্ভিস সেক্টর হিসেবেও আমি মনে করি এখানে সুযোগ রয়েছে।'
এরপরই ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি-ডিআরইউ প্রতিনিধিরা তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তার দপ্তরে। ডিআরইউ সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ, সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ চৌধুরী ও সদস্য মোতাহার হোসেন মন্ত্রীর সঙ্গে মতবিনিময়কালে সদ্য প্রয়াত সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর খোকনের পরিবারের জন্য সাহায্য কামনা করেন। সেইসঙ্গে করোনায় আক্রান্ত সাংবাদিকদের জন্য সুচিকিৎসা ও ডিআরইউ সদস্যদের জন্য সম্ভাব্য সরকারি সহায়তার আবেদন জানান।