নিজস্ব প্রতিবেদক: স্বেচ্ছায় অবসর না নেয়ায় ১৫৯ জন কর্মীকে ছাঁটাই করেছে টেলিযোগাযোগ কোম্পানি গ্রামীণফোন। রোববার এক ই-মেইলে তাদের চাকরিচ্যুৎ করা হয়। ছাঁটাই হওয়া ১৫৯ জন কর্মীর মধ্যে গ্রামীণফোন সেন্টারের কাস্টমার কেয়ারের ৩৯ জন এবং টেকনোলজি বিভাগের রিজিওনাল অপারেশন শাখার ১২০ জন রয়েছেন।
এসব কর্মীদের স্বেচ্ছা অবসর স্কিমের (ভিআরএস) আওতায় অবসর নেয়ার সুযোগ দিলে তারা তা গ্রহণ করেনি বলে জানায় মোবাইল অপারেটরটি।
এর মধ্যে ১৫৯ জন কর্মীকে রোববার (২০ জুন) ই-মেইলের মাধ্যমে নোটিশ পাঠিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ছাঁটাই করে মোবাইল অপারেটরটি।
এর আগে ২০২০ সালে ভিআরএস নেয়ার আহ্বান জানালে প্রায় একশ কর্মী এই স্কিমে চাকরি ছাড়েন। চলতি বছরের ৩ জুন আবারও এই স্কিমে চাকরি ছাড়ার প্রস্তাব দিয়ে ১৭ জুন পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয় কর্তৃপক্ষ। তখন প্রায় একশ কর্মী স্বেচ্ছা অবসরের আগ্রহ দেখিয়েছিলেন বলে জানায় গ্রামীণফোন।
গ্রামীণফোন এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের পক্ষ থেকে বলা হয়, গত কয়েক মাস ধরে পুনর্গঠনের নামে বিভিন্ন বিভাগের ১৬৭ জন কর্মীর কাজ বন্ধ রাখা হয়। পরে ৮ জনকে রেখে অবশিষ্ট ১৫৯ জনকে ছাঁটাই করে গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষ।
একটি চিঠিতে গ্রামীণফোন জানায়, প্রতিষ্ঠানটি প্রতিনিয়ত গ্রাহকদের পরিবর্তনশীল চাহিদা পূরণে সহায়তা করছে। এই যাত্রায় কাজের দায়িত্ব ও পরিধিতে পরিবর্তন ঘটায় কয়েকটি কার্যক্রম অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছে।
তাতে আরও বলা হয়, ১৩ মাস ধরে এসব কর্মীর কাজ ছিল না তাই তাদেরকে ছাঁটাই করতে হয়েছে।
ছাঁটাই হওয়া এক কর্মী বলেন, ‘গ্রামীণফোনে তাদেরকে প্রত্যেক মাসেই বেতন দেয়া হচ্ছিল যদিও তারা গত এক বছর ধরে কাজের বাইরে ছিলেন। তাদের কাজগুলো থার্ড পার্টির মাধ্যমে করানো হচ্ছিল।’
রোববার অফিস শেষে ই-মেইলের মাধ্যমে চাকরিচ্যুত হওয়ার নোটিশ পেয়েছেন তিনি।
গ্রামীণফোন এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মিয়া মো. শফিকুর রহমান মাসুদ বলেন, ‘অপারেটর ১৮৫ জন কর্মীকে এক বছরেরও বেশি সময় কাজ থেকে দূরে রেখেছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে এ নিয়ে গ্রামীণফোনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। বিষয়টি এখন হাইকোর্টে বিচারাধীন। মামলার শুনানি হওয়ার আগেই শ্রমিকদের ছাঁটাই হাইকোর্টের অবমাননার সমতুল্য। এটি বেআইনি।’
গ্রামীণফোনের এক্সটারনাল কমিউনিকেশনস বিভাগের প্রধান মো. হাসান বলেন, ‘গ্রামীণফোন তার কর্মীদের ব্যাপারে যত্নশীল। মোবাইল অপারেটরটি কঠোরভাবে নিয়োগের নিয়ম ও দেশের আইন মেনে চলে।’
গ্রামীণফোন জানায়, ভিআরএসের আওতায় একজন কর্মী প্রভিডেন্ট ফান্ড ও গ্র্যাচুয়িটির বাইরে অতিরিক্ত চাকরির বয়স বিবেচনায় সর্বোচ্চ ১০০টি পর্যন্ত বেসিক পেয়ে থাকেন।
স্বাস্থ্যবিমা : গ্রামীণফোনে কর্মরত অবস্থায় একজন কর্মী যে স্বাস্থ্যবিমা সুবিধা পেতেন অবসরে যাওয়ার পরে পরবর্তী ২ বছর একই সুবিধা পাবেন। এই স্বাস্থ্যবিমার মধ্যে অবসরে যাওয়া কর্মীরা, তাদের স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে ও মা-বাবা ওপিডি ও আইপিডি সুবিধা পাবেন।
জীবন বিমা : এ বিমার আওতায় আগামী দুই বছরে মৃত্যুজনিত কারণে অবসরপ্রাপ্ত কর্মীর পরিবারকে ২৪ মাসের মোট বেতনের সমপরিমাণ ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
ওপিডি ও আইপিডি : এর আওতায় অবসরে যাওয়া কর্মী, তার স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে ও মা-বাবা আগামী দুই বছর (যতবার হাসপাতালে ভর্তি হবেন) ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিমা সুবিধা পাবেন।
সাননিউজ/এফএআর