নিজস্ব প্রতিবেদক : গত বছরের মার্চে দেশে করোনা রোগী শনাক্ত হয়। আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে রোগীর সংখ্যা। ভাইরাসটি প্রকোপ দেখা দেয়ার পর থেকে চলতি বছরের ৭ জুন পর্যন্ত সরকার পৌনে ৮০০ কোটি টাকার মাস্ক ও কিট ক্রয় করে।
রোববার (২০ জুন) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির নবম বৈঠকে এ তথ্য জানানো হয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসে।
সরকার স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় এ বছরের ৭ জুন পর্যন্ত প্রায় ৩০৫ কোটি টাকার মাস্ক ও প্রায় ৪৭০ কোটি টাকার কিট ক্রয় করে। এর মধ্যে সেন্ট্রাল মেডিকেল স্টোরস ডিপোর (সিএমএসডি) মাধ্যমে ২৬৬ কোটি ১৭ লাখ ২৪ হাজার টাকার মাস্ক ও ৪০১ কোটি ২৫ লাখ টাকার আরটি-পিসিআর টেস্ট কিট কেনা হয়।
কোভিড-১৯ ইমার্জেন্সি রেসপন্স প্যানডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস প্রকল্পের আওতায় ৩৯ কোটি নয় লাখ ২২ হাজার ৩৩৩ টাকার মাস্ক ও ৩৫ কোটি ৮০ লাখ ৩১ হাজার ১৪২ টাকার আরটি-পিসিআর কিট কেনা হয়। এছাড়া আরেকটি প্রকল্পের আওতায় ইউনিসেফের মাধ্যমে কেনা হয়েছে ৩২ কোটি ৯০ লাখ ৭২ হাজার টাকার কিট।
টিকা সংকট মোকাবিলায় গৃহীত পদক্ষেপের বিষয়ে বলা হয়, মোট তিন কোটি ডোজ টিকা কেনার লক্ষ্যে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট এবং দেশীয় প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকোর সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষর হয়। তিন কোটি ডোজের মধ্যে ৭০ লাখ ডোজ টিকা পাওয়া গেছে। এছাড়াও ভারত থেকে উপহার হিসেবে ৩২ লাখ ডোজ পাওয়া গেছে। চীন ও রাশিয়া থেকে টিকা আনার প্রক্রিয়া চলছে।
বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, ‘বৈঠকে মাস্ক ও কিট সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হয়েছে। এছাড়া কোভিড-১৯ শুরুর পর এ পর্যন্ত কত টাকার মাস্ক ও কিট কেনা হয়েছে, টিকার সংকট মোকাবিলায় কী কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে, ভ্যাকসিন জিটুজি নাকি এজেন্টের মাধ্যমে আনা হচ্ছে, কোভিড-১৯ মোকাবিলায় আইসিইউ ও অক্সিজেনের বর্তমান অবস্থা এবং সম্ভাব্য সংকট থেকে উত্তরণ নিয়ে আলোচনা হয়।’
জানা যায়, তথ্য বিভ্রান্তি এড়াতে ওই বৈঠকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সকল তথ্য প্রদান ও পর্যালোচনা শুধু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে দিতে অন্যান্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করা হয়। বৈঠকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার সুপারিশ করা হয়।
একই সঙ্গে করোনা আক্রান্ত চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত প্রণোদনা সহজভাবে যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে দ্রুত সময়ে তাদের পরিবারের কাছে তা পৌঁছানোর কথা বলা হয়। দেশের সব জনগণকে টিকার আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে টিকা উৎপাদনে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার সুপারিশও করা হয়।
কমিটির সভাপতি শেখ ফজলুল করিম সেলিমের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, আ ফ ম রুহুল হক, মো. আব্দুল আজিজ, সৈয়দা জাকিয়া নুর, রাহগির আলমাহি এরশাদ এবং মো. আমিরুল আলম মিলন অংশ নেন। এছাড়াও বৈঠকে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব, পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের মহাপরিচালক, বিভিন্ন সংস্থার প্রধানসহ মন্ত্রণালয় এবং সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সান নিউজ/এমএইচ