নিজস্ব প্রতিবেদক:
বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে অনলাইনে জাতীয় পরিচয়পত্র সম্পর্কিত সেবা দেবে নির্বাচন কমিশনের এনআইডি অনুবিভাগ।
২৭ এপ্রিল সোমবার জাতীয় পরিচয়পত্র অনুবিভাগের মহাপরিচালক সাইদুল ইসলাম অনলাইন ভিত্তিক এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।
সম্মেলনে এনআইডি অনুবিভাগের একাধিক কর্মকর্তা ও সাংবাদিকরা সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এসময় তারা ভোটারদের ছয় ধরনের সেবা দেবেন বলে জানান।
সেবাগুলো হলো:
ভোটার হিসেবে নিবন্ধিতদের জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি সংগ্রহ, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর সংগ্রহ, জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন, হারানো জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য আবেদন, নতুন ভোটার নিবন্ধন এবং এসএমএস সেবা।
এই সুযোগ গ্রহণ করে কোনও ভোটার এসএমএস বা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর জেনে নিজেরাই প্রিন্ট করতে পারবেন।
সংবাদ সম্মেলনে এনআইডি ডিজি জানান, নির্বাচন কমিশন করোনা পরিস্থিতিতে এনআইডি সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে অনলাইন এনআইডি সেবা চালু করেছে। বন্ধের এই সময়ে এসএমএস, অনলাইন ও অন্যান্য মাধ্যমে এ সেবা পাওয়া যাবে। অনলাইনের এই সেবা পেতে ভোটারকে নির্বাচন কমিশনের সাইটে প্রবেশ করতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
মোবাইলের এসএমএসের মাধ্যমে এনআইডি নম্বর পাওয়ার পদ্ধতি: nidformNo লিখে 105 নম্বরে পাঠাতে হবে। এক্ষেত্রে নতুন ভোটারদের তালিকাভুক্তির সময় যে স্লিপ নম্বরটি দেওয়া হয়, সেটিই ফরম নম্বর হিসেবে বিবেচিত হবে। ফিরতি এসএমএসের মাধ্যমে এনআইডি নম্বর পাঠানো হবে।
যেমন উদাহরণ: nid XXXXXXX 24-08-1992 লিখে এসএমএস করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, সর্বশেষ হালনাগাদকৃত ভোটার তালিকা প্রকাশিত ৬৯ লাখ ৫৮ হাজার ৩৪১ জন নতুন নিবন্ধিত ভোটারের মধ্যে যারা কার্ড পাননি তারা তাদের নিবন্ধন ফরম নম্বর ও জন্ম তারিখ দিয়ে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করবেন।
পরে বায়োমেট্রিক যাচাই শেষে এনআইডি কপি বা নম্বর পাবেন তারা। তবে দ্বৈত ভোটার হলে এনআইডি কপি বা নম্বর পাওয়া যাবে না।
যারা রেজিস্ট্রেশন করেছেন কিন্তু এনআইডি কার্ড পাননি তারা কমিশনের ওয়েবসাইটে ‘অন্যান্য তথ্যের’ ট্যাবে গিয়ে এনআইডি নম্বর লিংকে ফরম নম্বর ও জন্মতারিখ দিলে এনআইডি নম্বর পাবেন।
যারা এনআইডি নম্বর পেয়েছেন তারা অনলাইন পোর্টালে এনআইডির তথ্য ও মোবাইল নম্বর দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে লগইন করতে পারবেন। লগইনের পর আবেদনকারী ফরমের এন্ট্রিকৃত সব ডাটা দেখতে পারবেন। রেজিস্ট্রেশন করা ব্যক্তি যদি পূর্বে কার্ড না পেয়ে থাকেন তিনি চাইলে পোর্টাল হতে এনআইডি কপি সংগ্রহ করতে পারবেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, কোনও ব্যক্তি যদি জাতীয় পরিচয়পত্র হারিয়ে ফেলেন অথবা সংশোধন করতে চান তবে তিনি প্রয়োজনীয় দলিলাদি সংযুক্ত করে অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। অনলাইনে আবেদনকারী এনআইডি কার্ডের আবেদনের বর্তমান অবস্থান জানতে পারবেন। আবেদন অনুমোদিত হলে আবেদনকারী এসএমএস পাবেন এবং অনলাইন পোর্টাল হতে পুনরায় এনআইডি কপি সংগ্রহ করতে পারবেন।
এছাড়া যেসব যোগ্য নাগরিক ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হননি, তারা কমিশনের ওয়েবসাইটে ভোটার হতে নতুন নিবন্ধনের আবেদন করে রাখতে পারবেন। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সংশ্লিষ্ট থানা, উপজেলা ও আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসে এসে বায়োমেট্রিক দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন। পরবর্তীতে তাদের আবেদন যাচাই-বাছাই করে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে ও জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়া হবে।
জানানো হয়, চলতি রমজান মাসে জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগের হেল্পলাইন কল সেন্টারের ১০৫ নম্বরে ফোন করে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত সেবা পাওয়া যাবে।
দেশের ৬৪টি জেলার ডাটা এন্ট্রি অপারেটরদের মোবাইল নম্বর অনলাইন পোর্টালে দেওয়া আছে। সংশ্লিষ্ট এলাকার আবেদন সংক্রান্ত যেকোনও প্রয়োজনে এই মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করা যাবে।
প্রসঙ্গত, করোনাভাইরাস প্রকোপের কারণে প্রথম দফায় গত ১৯ মার্চ থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা বন্ধ করে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন। পরে সরকার কয়েক দফায় জরুরি ছুটি ৫ মে পর্যন্ত বাড়ালে অনলাইনের মাধ্যমে সংশোধন, তথ্য হালনাগাদের আবেদন ও অনলাইন কপি ডাউনলোডের এই সেবা চালুর সিদ্ধান্ত নেয় নির্বাচন কমিশন।
সান নিউজ/সালি