নিজস্ব প্রতিনিধি, নারায়ণগঞ্জ : নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে বকেয়া বেতনের দাবিতে পুলিশ ও আনসার সদস্যদের সঙ্গে শ্রমিকদের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে পুলিশ-সাংবাদিকসহ প্রায় ২০ জন আহত হয়। শনিবার (১২ জুন) সকাল ৭টা থেকে আদমজী ইপিজেডের সামনে কুনতুং এ্যাপারেলস লিঃ (ফ্যাশন সিটি) নামে একটি পোশাক কারখানার চাকরিচ্যুত শ্রমিকরা বকেয়া বেতনের দাবিতে সড়কে অবস্থান নিলে এ সংঘর্ষ হয়।
শ্রমিকরা জানায়, মালিকপক্ষের দেয়া সময় অনুযায়ী শনিবার সকাল ৭ টায় বেতন নিতে আসে শ্রমিকরা। সেখানে প্রায় দুই শতাধিক পোশাক শ্রমিক আদমজী ইপিজেডের প্রধান গেইটের সামনে ডেমরা-আদমজী-নারায়ণগঞ্জ সড়কে অবস্থান নেয়। এসময় ইপিজেডে নিয়োজিত আনসার সদস্যরা নারী ও পুরুষ শ্রমিকদের উপর লাঠিচার্জ করে। প্রায়ই শ্রমিকদের সাথে আনসার সদস্যরা অশালীন আচরণ ও নির্যাতন করে বলে অভিযোগ শ্রমিকদের।
পরে ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা সড়কে আগুন দিয়ে সড়ক অবরোধ করে। দুই দফায় নারায়ণগঞ্জ পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মেহেদী ইমরান সিদ্দিকী ও সহকারী কমিশনার রেজা মো. গোলাম মাসুম প্রধান মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন। কিন্তু শ্রমিকরা আরও ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। এক পর্যায়ে পুলিশ ও আনসারদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে শ্রমিকরা। এতে পুলিশ ও সাংবাদকিসহ প্রায় ২০ জন আহত হয়। পরে শ্রমিকরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। প্রায় ১১টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয় পুলিশ।
পোশাক শ্রমিক রিনা আক্তার বলেন, আমি ছয় বছর ঐ কারখানায় কাজ করেছি। কিন্তু আমি আমার বকেয়া বেতন এখনও পাইনি। ছয় বছরে প্রায় দুই লাখ টাকা জমেছে। তানিয়া নামে আরেক শ্রমিক জানায়, নয় বছরে তারও প্রায় দুই লাখের বেশি টাকা জমেছে।
সহকারী কমিশনার (সিদ্ধিরগঞ্জ সার্কেল) রেজা মোঃ গোলাম মাসুম প্রধান বলেন, শ্রমিকরা জানিয়েছে মালিকপক্ষ তাদেরকে বারবার সময় দিয়েও পাওনা পরিশোধ করছে না। শ্রমিকদের পাওনা আদায়ে মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলার আশ্বাস দিলেও শ্রমিকরা তা মেনে নেয়নি।
নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ মেহেদী ইমরান সিদ্দিকী জানান, শ্রমিকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে সড়কে আগুন দিয়ে সড়ক অবরোধ করে এবং ইট-পাটকেল ছুড়তে শুরু করে। পুলিশও ১২ রাউন্ড শর্টগান গুলি ছোড়ে এবং ১১টি টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে শ্রমিকদের রাস্তা থেকে সড়িয়ে দেয়। পরে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। তবে শ্রমিকদের সমস্যা সমাধানে মালিকপক্ষ কিছুই জানায়নি।
এ বিষয়ে বেপজার জিএম আহসান কবির জানান, কারখানা বিক্রি করে শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করবে বলে জানিয়েছে ফ্যাশন সিটির মালিকপক্ষ। তবে শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধে কোনো সময় বা তারিখ দেয়া হয়নি।
সান নিউজ/এমএইচ