নিজস্ব প্রতিবেদক:
করোনা প্রাদুর্ভাবে ভিক্ষা করে জমানো ১০ হাজার টাকা দুর্গতদের মাঝে বিতরণ করা ভিক্ষুক নাজিম উদ্দিনের প্রশংসা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
নাজিম উদ্দিনের মানবিকতা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'ভিক্ষুক নাজিম উদ্দিন যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন, তার কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। মানুষের জন্য মানুষ। আমি মনে করি দেশে অনেকের মধ্যে এই প্রবণতা আছে। যে নিজে শুধু একা খায় না, প্রতিবেশী না খেয়ে থাকলে তাকেও সাহায্য করে, তাদের সেই উদারতা আছে।'
সোমবার (২৭ এপ্রিল) সকালে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে রাজশাহী বিভাগের আট জেলার প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, চিকিৎসকসহ অন্যান্য প্রতিনিধিদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে মতবিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় সূচনা বক্তব্যে নাজিম উদ্দিনের প্রশংসা করেন সরকার প্রধান।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এত বড় মানবিক গুণ আমাদের অনেক বিত্তশালীর মাঝেও দেখা যায় না। বাংলাদেশের মানুষের মাঝে কিন্তু এখনো এই মানবিক বোধটা আছে। কিন্তু সেটা আমরা পাই কাদের কাছে? যারা নিঃস্ব তাদের কাছে। অনেক সময় দেখি, অনেক বিত্তশালীরা হা হুতাশ করেই বেড়ায়। তাদের ঘরে নাই নাই অভ্যাসটা যায় না। তাদের চাই চাই ভাবটাই সবসময় থেকে যায়।'
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন হয়েছে আপনারা দেখেছেন যে একজন ফকির ভিক্ষা করে খায়। একটা সাধারণ মানুষ। একসময় কৃষি কাজ করত। অ্যাক্সিডেন্ট করে তার পা-টা ভেঙে যায়। তারপর আর কাজ করতে পারেনি। ভিক্ষা করে। এভাবে ভিক্ষা করে করে মাত্র দশ হাজার টাকা সে জমা করেছিল। তার থাকার ঘরটা ঠিক করবে। তার একটা মাত্র পাঞ্জাবি, ছেঁড়া কাপড় গায়ে। তার খাবারও ঘরে ঠিকমতো নেই। কিন্তু তারপরও সে মানুষটা সেই জমানো দশটি হাজার টাকা সে তুলে দিয়েছে করোনাভাইরাসে যারা ক্ষতিগ্রস্ত তাদের সাহায্যের জন্য। আমি মনে করি, সারাবিশ্বে একটা দৃষ্টান্ত তিনি সৃষ্টি করেছেন। এতো বড় মানবিক গুণ আমাদের অনেক বিত্তশালীর মাঝেও দেখা যায় না। কাজেই একজন নিঃস্ব মানুষ, যার কাছে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যে-ওই টাকা দিয়ে আরও দুইটা জামা কিনতে পারত, ঘরে আবার খাবার কিনতে পারত বা এই করোনাভাইরাসের কারণে তার যে অসুবিধা তার জন্য চিন্তা করতে পারত। কোনো চিন্তা সে করেনি। আর এ অবস্থায় তো ঘুরে ঘুরে ভিক্ষা পাওয়াও তার মুশকিল। সেটাও সে করে নাই। তারপরও সে চিন্তা করে নাই। কিন্তু তার সেই শেষ সম্বলটুকু সে দান করে গেছে। এটি একটা মহৎ উদারতা দেখালেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'বাংলাদেশের মানুষের মাঝে কিন্তু এখনো এই মানবিক বোধটা আছে। কিন্তু সেটা আমরা পাই কাদের কাছে? যারা নিঃস্ব তাদের কাছে। আমি মনে করি, যিনি এটা করলেন শেরপুর উপজেলার ঝিনাইগাতির একটা গ্রাম তার নাম হচ্ছে নাজিম উদ্দিন। নাজিম উদ্দিন এই যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, তার কাছ থেকে আমাদের অনেক কিছু শেখার আছে।’