নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশে জুলাই মাস থেকে বন্ধ হচ্ছে অবৈধপথে আসা এবং নেটওয়ার্কের বাইরে থাকা মোবাইলফোন। তবে অবৈধপথে আসা কিন্তু বর্তমানে সচল এমন মোবাইল হ্যান্ডসেট বন্ধ করা হবে না।
প্রথমবারের মতো ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্ট্রার (এনইআইআর) সিস্টেম ব্যবহার করে এসব অবৈধ মোবাইল ফোন শনাক্তের পাশাপাশি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এনইআইআর পদ্ধতির মাধ্যমে দেশে নেটওয়ার্কের বাইরে থাকা ও অবৈধ মোবাইল ফোন শনাক্ত করবে।
মঙ্গলবার (১ জুন) বিটিআরসির তরঙ্গ বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শহিদুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, অবৈধ ও চোরাইপথে মোবাইল হ্যান্ডসেট দেশে আসার ফলে সরকার যে শুল্ক থেকে বঞ্চিত হচ্ছিল তা আর হবে না। এছাড়া দেশীয় মোবাইল হ্যান্ডসেট উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানও অনুপ্রাণিত হবে।
তিনি জানান, এ পদ্ধতিটি চালু হলে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবেন মোবাইলসেট ব্যবহারকারীরা। এর ফলে মোবাইল হারালে অন্য কেউ হারিয়ে যাওয়া মোবাইলটি ব্যবহার করতে পারবে না।
বিটিআরসি সূত্র জানায়, দেশে বর্তমানে প্রায় ১৫ কোটি মোবাইল হ্যান্ডসেট ব্যবহার হচ্ছে। চালু থাকা ফোনগুলোর একটি ডাটাবেস প্রস্তুত করার কাজ শেষের পথে। আগামী ৯ জুনের মধ্যে এনইআরআইআর-এর ইনস্টলেশন কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে। আর ১ জুলাই থেকে অবৈধ মোবাইল শনাক্তের প্রক্রিয়া শুরুর সম্ভাবনা রয়েছে।
বিটিআরসির মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শহিদুল আলম জানান, জুলাইয়ের আগে গ্রাহকরা যে সমস্ত অননুমোদিত বা অবৈধভাবে আসা হ্যান্ডসেট ব্যবহার শুরু করেছেন তাদের নিবন্ধন কার্যক্রমের অনুমোদনের আওতায় আনা হবে। অর্থাৎ সচল মোবাইল ফোন বন্ধ করা হবে না।
বিটিআরসি সূত্র জানায়, এসএমএস-এর মাধ্যমে ডাটাবেস ব্যবহার করে আমদানি করা হ্যান্ডসেটগুলোর বৈধতা পরীক্ষা করা যাবে। এনইআইআর পদ্ধতি ১৫ দিনের অস্থায়ী সময়ের জন্য কাজ করবে এবং এর ট্রায়াল রান জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে।
বিদেশ থেকে কেনা বা উপহার পাওয়া হ্যান্ডসেটগুলো বিটিআরসিতে বৈধ কাগজপত্র জমা দিয়ে নিবন্ধন করা যাবে। যদি কোনো ব্যবহারকারী তার হ্যান্ডসেটটি বিক্রি করতে চান, তবে তাকে নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটের মাধ্যমে হ্যান্ডসেটটি নিবন্ধনভুক্ত করে নতুন ব্যবহারকারীর নামের অধীনে ডাটাবেসে পুনরায় নিবন্ধন করাতে হবে।
যেভাবে নতুন এ প্রযুক্তি কাজ করবে : অনুমোদিত হ্যান্ডসেটগুলোর আইএমইআই নম্বর সংরক্ষণ করা থাকবে। যখনই কোনো সিম কার্ড হ্যান্ডসেটে প্রবেশ করানো হবে তা বিটিআরসি ডাটাবেসে একটি সংকেত দিবে। হ্যান্ডসেটের আইএমইআই ডাটাবেসের সঙ্গে মিলে যাওয়ার পরই সিম কার্ডটি চালু হবে।
যদি সক্রিয় সিম কার্ড মোবাইলে প্রবেশের পর বিটিআরসি’র ডাটাবেসে ওই মোবাইল ফোন হ্যান্ডসেট না পাওয়া যায় তাহলে বিটিআরসি ওই হ্যান্ডসেটের আইএমইআই নম্বরকে 'সাদা তালিকা'য় সাত দিন রেখে ব্যবহারকারীকে ফোনটি আমদানি বা কেনার আইনি নথি ব্যবহার করে নিবন্ধনের সময় দেবে।
চলতি বছরের শুরুতে অবৈধ পথে আসা মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক বন্ধে এনইআইআর ১ জুলাইয়ের মধ্যে চালু করার ঘোষণা দেয় বিটিআরসি। ওই সময়ে বিটিআরসি চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার বলেছিলেন, যে হ্যান্ডসেটগুলো গ্রাহকের হাতে আছে তাদেরকে ডিসটার্ব না করে কাজটি করতে চাই। যেগুলো চালু আছে তাদের ইনকর্পোরেট করে নেব, সে সুযোগ দেব। নতুন হ্যান্ডসেট যেগুলো আসবে সেগুলো অবশ্যই নিবন্ধন হয়ে আসতে হবে।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শহিদুল আলম জানিয়েছিলেন, হ্যান্ডসেট বৈধ কি না তা এখন যাচাই করা যাচ্ছে। এনইআইআর প্রযুক্তি সরবরাহ ও পরিচালনা করছে সিনেসিস আইটি। কোম্পানিটির সঙ্গে এই কাজে জয়েন ভেঞ্চারে আছে রেডিসন টেকনোলজি ও কম্পিউটার ওয়ার্ল্ড।
সান নিউজ/এসএম