নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজধানীর বেশিরভাগ এলাকায় এখনও ঝুলন্ত তারের জঞ্জাল রয়েই গেছে। গত বছরের নভেম্বরের মধ্যে ঢাকার সিটি করপোরেশন এলাকার ঝুলন্ত তার অপসারণের কথা থাকলেও গত ৬ মাসে এ কাজে উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি হয়নি।
তারের জঞ্জাল সরাতে গত বছরের ৫ আগস্ট ঢাকা দক্ষিণে এবং ১ অক্টোবর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন তার কাটার অভিযান শুরু করেছিল। এর প্রতিবাদে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি) এবং কেবল অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (কোয়াব) তাদের সেবা বন্ধের ঘোষণা দেয়।
পরে কর্মসূচি স্থগিত করে গত বছরের ১৮ অক্টোবর মেয়র তাপসের সঙ্গে বৈঠক করেন সংগঠনের নেতারা। বৈঠকে গত বছরের নভেম্বরের মধ্যে ঝুলন্ত সব তার অপসরণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তারা।
প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পর বেঁধে দেওয়া সময়ের প্রায় ৬ মাস অতিবাহিত হলেও শহরের ঝুলন্ত তার অপসারণে উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি। শহরের প্রধান সড়কসহ অলিগলি সর্বত্রই এখনও ঝুলন্ত তার দেখা যাচ্ছে।
প্রথমে সিটি করপোরেশন অভিযান চালিয়ে বেশকিছু এলাকায় এসব ক্যাবল কেটে ফেলে। পরে আইএসপিএবি এবং কোয়াব নিজেরাই তার অপসারণের কাজ শুরু করে। কিন্তু তাদের কার্যক্রমের উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি এখনও দেখা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।
নগর সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শহরজুড়ে তারের জঞ্জাল থাকায় সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে। পুরো রাজধানী ঝুলন্ত তারে সয়লাব হয়ে আছে। ইন্টারনেট, কেবল টিভি নেটওয়ার্কসহ নানা তারের দৃশ্য ঢাকা মহানগরের পাড়া-মহল্লা, বাণিজ্যিক এলাকাসহ সর্বত্র একই। দ্রুত এসব তার অপসারণ করে নগরীর সৌন্দর্য বর্ধন করা উচিত।
গত বৃহস্পতিবার ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) নগর ভবনে গিয়ে দেখা গেছে, প্রথম দিকে অভিযানে যে ঝুলন্ত তার অপসারণ করা হয়েছিল, সেগুলো নগর ভবনের সীমানার মধ্যে পূর্ব দিকে বিভিন্ন স্থানে স্তূপ করে রাখা হয়েছে।
জানা গেছে, আইএসপিএবি এবং কোয়াব আবেদনের প্রেক্ষিতে সড়ক খনন ক্ষতিপূরণসহ ১৪৬ স্থানে ঝুলন্ত তার মাটির নিচে নেওয়ার অনুমতি দেয় ডিএসসিসি।
এই ১৪৬টি স্থানের মধ্যে যেসব স্থান দক্ষিণ সিটির আওতাভুক্ত, সেসব সড়কে এইচডি পদ্ধতিতে রোড ক্রসিং করার জন্য সড়ক খননের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সেসব স্থানে বর্তমানে কাজ করছে আইএসপিএবি এবং কোয়াব।
আইএসপিএবি সূত্রে জানা গেছে, ঝুলন্ত তার অপসারণে দক্ষিণ সিটি এলাকায় কাজ চলমান থাকলেও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকায় তুলনামূলকভাবে এই কাজ করতে পারেনি আইএসপিএবি।
উত্তর সিটি করপোরেশন থেকে পুরোপুরি কাজ করার অনুমতি এখনও পায়নি তারা। অনুমতি নিয়ে তারা ঢাকা উত্তরেও বড় পরিসরে ঝুলন্ত তার অপসারণের কাজ করতে চায়।
ঝুলন্ত তার অপসারণ কাজের সার্বিক অগ্রগতি নিয়ে জানতে চাইলে আইএসপিএবি সভাপতি এম এ হাকিম বলেন, আমাদের কাজটি ডিজিটাল কাজ, বাইনারি কাজ। অর্থাৎ হয় শূন্য না হয় ওয়ান। ৯৯ শতাংশ কাজ করলেও ওভার হেড কেবল রিমুভ হবে না। শতভাগ কাজ করলে বাইনারি হিসেবে ওয়ান হবে।
তাই এখানে কত শতাংশ আমাদের কাজ হয়েছে তা বলা কঠিন। আমাদের কাজ চলছে। আমাদের ফেজ ওয়ানের (প্রথম ধাপ) টার্গেট হচ্ছে প্রধান সড়কের তারগুলো অপসারণ করে ফেলা। ফেস টু-তে (দ্বিতীয় ধাপ) সাব রোড বা গলিতে কাজ করা।
এর আগে যখন ঝুলন্ত তার অপসারণে দুই সিটি করপোরেশন অভিযানে নেমেছিল, তখন প্রতিবাদে সংযোগ বিচ্ছিন্ন রাখার কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছিল আইএসপিএবি এবং কোয়াব।
সেসময় জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে স্থায়ী সমাধান না করা পর্যন্ত কোনো ঝুলন্ত ক্যাবল অপসারণ না করাসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছিল আইএসপিএবি ও কোয়াব।
সাননিউজ/এএসএম