নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকারি গোপন তথ্য চুরির মামলায় গ্রেপ্তার প্রথম আলোর সিনিয়র সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের ব্যাপারে দুই জন মন্ত্রীর আশ্বাস পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন জাতীয় প্রেসক্লাবের নেতারা।
স্বরাষ্ট্র এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এ কথা জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে পৃথকভাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে দেখা করেন প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন ও সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের পর সচিবালয়ে ফরিদা ইয়াসমিন সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, রোজিনার চিকিৎসা এবং কারাগারে যাতে নতুন করে ‘হেনস্থা’ হতে না হয়ে সে বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ‘সাধ্যমত’ দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।
তাদের সঙ্গে আলাপকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বৃহস্পতিবার শুনানিতে রোজিনার জামিনের আশাও প্রকাশ করেন বলে প্রেস ক্লাবের সভাপতি অপেক্ষারত সাংবাদিকদের জানান।
ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, তথ্যমন্ত্রীও বিষয়টার সুন্দর সমাধানের কথা বলেছেন।
অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট ও দণ্ডিবিধির কয়েকটি ধারার মামলায় সোমবার রাতে গ্রেপ্তার প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামের বিষয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গেও কথা বলবেন বলে জানান ফরিদা।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের সঙ্গে সাক্ষাতে তারা যেসব বিষয় তুলেছেন, সেগুলো নিয়ে তিনি বলেন, রোজিনার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা। যেহেতু কারাগারে পাঠানো হয়েছে, সেখানের অবস্থা কী...? তার পরিবেশটা যেন ভালো থাকে। ভালোভাবে যেন থাকতে পারে।
ওইখানে (জেলখানায়) যেন নতুন করে হেনস্থা করা না হয়। এটা নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন, সাধ্যমত দেখবেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেছেন যে, বৃহস্পতিবার যে জামিন শুনানি হবে, সেখানে হয়ত জামিন হয়ে যাবে।
এই ধরনের ঘটনা যাতে আর না ঘটে তেমনটাও আশা করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী উল্লেখ করে জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এটাও বলেছেন যে, সাংবাদিকদের সঙ্গে সরকারের কোনো রকম একটা ভুল বোঝাবুঝি হোক তা তারা চান না। এটার সুষ্ঠু একটা সমাধান হোক তা তারাও চান।
আলাপকালে হেনস্থাকারীদের বিচারের জোরালো দাবি তোলা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী 'ওইভাবে' এই বিষয়ে কিছু বলেননি। তিনি যথাযথ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন।
ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, আমরা স্পষ্ট করে বলেছি যে, তল্লাশির নামে হেনস্থা করা হয়েছে রোজিনাকে। এটার বিচার করতে হবে।
সরকারি নথি ‘চুরির চেষ্টার’ অভিযোগে সোমবার সচিবালয়ে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের এক কর্মকর্তার কক্ষে সাংবাদিক রোজিনাকে প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা আটকে রাখা হয়।
পরে রাতে তাকে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করা হয় এবং অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট ও দণ্ডিবিধির কয়েকটি ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলা করেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপসচিব শিব্বির আহমেদ।
মঙ্গলবার আদালতে নিয়ে রোজিনা ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নিতে পুলিশের আবেদন করলে তা শুনানি শেষে নাকচ করে দিয়েছে আদালত।
এছাড়া তার জামিনের বিষয়ে আংশিক শুনানি শেষে বিচারক বাকি শুনানির জন্য বৃহস্পতিবার তারিখ রেখেছেন।
প্রেস ক্লাবের সভাপতি বলেন, রোজিনা ইসলামের উপর আঘাত মানে সাংবাদিকদের উপর আঘাত। এ ঘটনা যাতে পুনরাবৃত্তি না হয় তা আমরা চাই।
মঙ্গলবার রোজিনার জামিন হবে আশা করলেও তা না হওয়ায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে তারা দুঃখ প্রকাশ করেছেন জানিয়ে তিনি আরো বলেন, এটা এমন কোনো অপরাধ না যে, তাকে জামিন দেওয়া যাবে না।
প্রেসক্লাব নেতারা মঙ্গলবার সচিবালয়ের কার্যালয়ে তথ্যমন্ত্রীর সঙ্গেও দেখা করেন। ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, তথ্যমন্ত্রীও বলেছেন, বিষয়টা সুন্দরভাবে সুস্থভাবে সমাধান হোক তা তারা চান।
সান নিউজ/আরআই