নিজস্ব প্রতিবেদক : মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চলমান ছুটি আগামী ২৯ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। শনিবার (১৫ মে) রাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবুল খায়ের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে (শনিবার রাতে) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জারি করা এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে চলমান কোভিড- ১৯ অতিমারিতে সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি পরিলক্ষিত হওয়ায় শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মচারী ও অভিভাবকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও সার্বিক নিরাপত্তা বিবেচনায় এবং কোভিড- ১৯ সংক্রান্ত জাতীয় পরামর্শক কমিটির সঙ্গে পরামর্শক্রমে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চলমান ছুটি আগামী ২৯ মে ২০২১ তারিখ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।’
এতে আরও বলা হয়েছে, ‘ছুটির সময় অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।’
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি ২৯ মে পর্যন্ত বাড়ানো হলেও বিশ্ববিদ্যালয় কবে খোলা হবে সে ব্যাপারে কিছু বলা হয়নি। এ নিয়ে চলতি সপ্তাহে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের একটি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। সেখান থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান ছুটি কতদিন বাড়বে এবং স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার তারিখ পুনঃনির্ধারিত হবে।
দেশে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে উদ্বেগ
করোনা সংক্রমণের হার ৫ শতাংশের নিচে নেমে আসায় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ৩০ মার্চ স্কুল-কলেজ এবং ২৪ মে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার ঘোষণা দেন। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রীর এমন ঘোষণার পরপরই বাড়তে থাকে সংক্রমণের হার। শুরু হয় করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। পাল্টাতে থাকে পরিস্থিতি। বদলে যায় স্কুল-কলেজ খোলার তারিখ।
নতুন করে তারিখ দিয়ে বলা হয়, ২৪ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে খুলবে স্কুল কলেজও। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সেই তারিখ যখন দোরগোড়ায়, ঠিক তখন দেশে করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ধরা পড়েছে রোগীর শরীরে। এতে নতুন করে উদ্বেগ বাড়ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার তারিখ নিয়ে।
এদিকে ১৭ মে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল খুলে দেওয়ার কথা থাকলেও সেখান থেকে সরে এসেছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা বলছেন, ১৬ মে পর্যন্ত সরকারি বিধিনিষেধ রয়েছে। সেই বিধিনিষেধ আরও এক সপ্তাহ বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে সরকার। এই অবস্থায় হল খুলে দেওয়ার কোনো পরিস্থিতি নেই।
এছাড়াও সারাদেশের সব শিক্ষক, কর্মচারী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের এক লাখ ৩০ হাজার আবাসিক শিক্ষার্থীর টিকা গ্রহণ নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। ফলে সঙ্গত কারণে পূর্বনির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী ২৪ মে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলছে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভোস্ট কমিটির সভায় ১৭ মে আবাসিক হল না খোলার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এর আগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক প্রফেসর সৈয়দ গোলাম মোহাম্মদ ফারুক বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ ৫ শতাংশের নিচে না এলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়তো সম্ভব হবে না। দেশে করোনাভাইরাসের ভারতীয় ধরন ধরা পড়ার পর এ নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। তাই আপাতত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষা কার্যক্রম আরও গতিশীল করতে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জেলা পর্যায়ে অনলাইন ক্লাসে উপজেলা শিক্ষার্থীদের সংযুক্ত করার জন্য বলা হয়েছে।
সান নিউজ/এসএম