সান নিউজ ডেস্ক:
অতীতের ভুল-ভ্রান্তি ও অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বর্তমান সরকারের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে তিনি একথা বলেন।
একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর সরকার গঠনের এক বছর পূর্ণ হলো ৭ জানুয়ারী। সে উপলক্ষ্যে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সরকারের তৃতীয় মেয়াদের এক বছর পুর্তিতে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন।
এসময় তিনি বলেন, আমাদের সামনে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ আসবে। সবার সহযোগিতায় সেসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করবো, ইনশাআল্লাহ। দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে চলমান অভিযান অব্যাহত রাখার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমি আবারও সবাইকে সতর্ক করে দিতে চাই, দুর্নীতিবাজ যেই হোক, যত শক্তিশালীই হোক না কেন তাকে ছাড় দেয়া হবে না। আপনাদের স্মরণ আছে, গত বছর সরকার গঠনের পর জাতির উদ্দেশে ভাষণে আমি দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের শোধরানোর আহ্বান জানিয়েছিলাম। আমি সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করি। মানুষের কল্যাণের জন্য আমি যেকোনো পদক্ষেপ করতে দ্বিধা করবো না”।
তিনি বলেন, “দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রতি আহ্বান থাকবে, যেই অবৈধ সম্পদ অর্জনের সঙ্গে জড়িত থাকুক, তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসুন। সাধারণ মানুষের ‘হক’ যাতে কেউ কেড়ে নিতে না পারে তা নিশ্চিত করতে হবে। আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে জনসচেতনতা সৃষ্টির উদ্যোগ গ্রহণ করছি। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সম্প্রসারণের মাধ্যমে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুর্নীতির নির্মূল করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। দুর্নীতি বন্ধে জনগণের অংশগ্রহণ জরুরি। মানুষ সচেতন হলে, দুর্নীতি আপনা-আপনি কমে যাবে”।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর সরকার গঠনের এক বছর পূর্ণ হলো। বিগত এক বছর আমরা চেষ্টা করেছি আপনাদের সর্বোচ্চ সেবা দিতে। আমরা সবক্ষেত্রে শতভাগ সফল হয়েছি তা দাবি করবো না। কিন্তু এটুকু জোর দিয়ে বলতে পারি, আমাদের চেষ্টার ত্রুটি ছিল না”।
তবে তিনি স্বীকার করে বলেন, “গত বছর দু’একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। আমি দৃঢ়ভাবে বলতে চাই, আমরা এসব কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের প্রশ্রয় দেইনি। জড়িতদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিকভাবে প্রশাসনিক এবং আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কোনও কোনও মহল গুজব ছড়িয়ে অরাজকতা সৃষ্টির মাধ্যমে ফায়দা লুটার চেষ্টা করেছে। আমরা জনগণের সহায়তায় দ্রুত সেসব অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নিয়েছি”।
বক্তব্যের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের লক্ষ্য জাতির জীবনে নতুন জীবনীশক্তি সঞ্চার করা।স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর প্রাক্কালে জাতিকে নতুন মন্ত্রে দীক্ষিত করে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বাস্তবায়নের পথে আরও একধাপ এগিয়ে যাওয়া হবে মূল মন্ত্র। আগামী ১৭ মার্চ বর্ণাঢ্য উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বছরব্যাপী অনুষ্ঠানমালার শুভ সূচনা হবে। আমরা ইতোমধ্যেই ২০২০-২১ সালকে মুজিববর্ষ হিসেবে ঘোষণা করেছি”।
দেশবাসীকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানিয়ে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিপুলভোটে বিজয়ী হয়ে গত বছরের ৭ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ পঁচাত্তর-পরবর্তী সময়ে চতুর্থবারের মত সরকার গঠন করার জন্য দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান বঙ্গবন্ধু কন্যা।
এনসময় তিনি বরর্তমান সরকারের গৃহীত বিভিন্ন কর্মকান্ডের কথা তুলে ধরার পাশাপাশি ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে স্বজন হারানো পরিবারগুলোর প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
সান নিউজ/সালি