নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের সর্বোচ্চ আদালত আপিল বেঞ্চে মহামারি করোনাকালে ভার্চুয়ালি মোট ১০ হাজার ৩টি মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে। ২০২০ সালের ১৩ জুলাই থেকে গত ৬ মে পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে মামলা নিষ্পত্তির এই চিত্র তুলে ধরেন সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র ও বিশেষ কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুর রহমান।
করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে সাধারণ ছুটিতে আদালত বন্ধ রেখে ভার্চুয়ালি চালানোর জন্য গত বছরের ২৬ এপ্রিল উদ্যোগ নেওয়া হয়। এজন্য সুপ্রিম কোর্টের রুলস কমিটি পুনরায় গঠন এবং ভার্চুয়াল কোর্ট চালু করার জন্য প্রয়োজনীয় আইনগত প্রতিবন্ধকতা দূর করতে পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এ অবস্থায় একই বছরের ৭ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভপতিত্বে গণভবনে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘আদালত কর্তৃক তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ ২০২০’ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।
দুই দিন পর ৯ মে ভার্চুয়াল কোর্ট সম্পর্কিত অধ্যাদেশ জারি করা হয় (পরে এটি সংসদে পাস হয়)। এরপর ভার্চুয়ালি বিচারকাজ শুরু হয়।
সাইফুর রহমান জানান, শারীরিক উপস্থিতি ব্যতিরেকে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ভার্চুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে গত বছরের ১৩ জুলাই থেকে ৬ মে পর্যন্ত সময়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে ১০ হাজার ৩টি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে।
তাছাড়া বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের প্রত্যেক বেঞ্চে প্রতিদিন ১০০ জনের বেশি আইনজীবী শারীরিক উপস্থিতি ব্যতিরেকে ভার্চুয়াল উপস্থিতিতে শুনানি করছেন। হাইকোর্ট বিভাগে প্রতিদিন পাঁচ শতাধিক ফৌজদারি আবেদন নিষ্পত্তি হচ্ছে। প্রধান বিচারপতি পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটিতেও সর্বস্তরে প্রয়োজনীয় সংখ্যক বিচার আদালত খোলা রাখার সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। যাতে বিচারপ্রার্থীরা বিভিন্ন আবেদন দায়ের এবং শুনানি করতে পারেন।
জানা যায়, দ্বিতীয় দফায় ভার্চুয়াল আদালত শুরু হওয়ার পর গত ১২ এপ্রিল থেকে ৬ মে পর্যন্ত মোট ১৮ কার্যদিবসে সারাদেশে অধঃস্তন আদালত এবং ট্রাইব্যুনালে ৫৮ হাজার ৬০৫টি মামলায় জামিনের দরখাস্ত ভার্চুয়াল শুনানির মাধ্যমে নিষ্পত্তি হয়েছে এবং মোট ৩১ হাজার ২০৮ জন হাজতি অভিযুক্ত ব্যক্তি জামিনপ্রাপ্ত হয়ে কারাগার মুক্ত হয়েছেন।
প্রথম দফায় গত বছরের ১১ মে থেকে ৪ আগস্ট পর্যন্ত মোট ৫৮ কার্যদিবসে সারাদেশে অধস্তন আদালত এবং ট্রাইব্যুনালে ভার্চুয়াল শুনানিতে মোট ১ লাখ ৪৭ হাজার ৩৩৯টি ফৌজদারি মামলায় জামিন-দরখাস্ত নিষ্পত্তি এবং ৭২ হাজার ২২৯ জন অভিযুক্ত ব্যক্তির জামিন মঞ্জুর হয়েছে। এ পর্যন্ত মোট দুই দফায় সারাদেশে অধস্তন আদালত এবং ট্রাইব্যুনালে ২ লাখ ৫ হাজার ৯৪৪টি ফৌজদারি মামলায় জামিনের আবেদন ভার্চুয়াল শুনানির মাধ্যমে নিষ্পত্তি হয়েছে এবং মোট ১ লাখ ৩ হাজার ৪৩৭ জন হাজতি জামিন পেয়ে কারাগার থেকে মুক্ত হয়েছেন।
সান নিউজ/আরএস