নিজস্ব প্রতিবেদক : টিকা সরবরাহের ঘাটতি থাকলে দুই কোম্পানির দুই ডোজ দেয়া যাবে কি না, এ নিয়ে ভিন্নমত আছে বিশেষজ্ঞদের। অনেকেই বলছেন, নির্দিষ্ট টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিশ্চিত করতে না পারলে দেয়া যেতে পারে ভিন্ন কোম্পানির ডোজ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তাত্ত্বিক দিক বিবেচনা করলে কোভিডশিল্ডের দ্বিতীয় ডোজ হতে পারে স্পুটনিকের দ্বিতীয় ডোজ। তবে এমন সিদ্ধান্ত নিতে নারাজ আইইডিসিআর। আর অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা সময়মতো আসবে বলেও প্রতিষ্ঠানটির দাবি।
ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে কোভিশিল্ড টিকার চালানের অনিশ্চয়তার মধ্যেই রাশিয়ার স্পুটনিক ও চীনের সিনোফার্মাকে টিকার জন্য জরুরি ব্যবহারের অনুমদন দিয়েছে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর।
সোমবার (৩ মে) পর্যন্ত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসেবে টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছে ৫৮ লাখ ১৯হাজার ৭০৯ জন। দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছে ২৯ লাখ ৩৬ হাজার ২৪১ জন। অর্থাৎ এখনো ২৮ লাখ ৮৩ হাজার ৪৬৮ জন দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার বাকি।
আর দেশে টিকার মজুত আছে ১৫ লাখ ৪৪ হাজার ৫০ ডোজ। এমন অবস্থায় ঘাটতি আছে প্রায় ১৩ লাখ ৩৯ হাজার ৪১৮ ডোজ। তাই স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগে সপ্তাহ দু-একের মধ্যে অক্সফোর্ডের টিকার চালান না পেলে বিকল্প হিসেবে তাদের অন্য ভ্যাকসিনের দ্বিতিয় ডোজ দেয়া যাবে কি না।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রথমে মাথায় রাখতে হবে যে টিকার প্রথম ডোজ দেয়া হয়েছে সেই টিকারই দ্বিতীয় ডোজ নিশ্চিত করা। তবে তা সম্ভব না হলে একই ফর্মুলার অন্য টিকা নেয়া যেতে পারে।
তবে বিষয়টি এখনো গবেষণার টেবিলে তাই সিদ্ধান্ত নিতে হবে তাত্ত্বিক ফলাফলের ভিত্তিতে। সেক্ষেত্রে সেরাম থেকে আনা কোভিড শিল্ডের বিকল্প হতে পারে স্পুটনিক-ভি।
বিএসএমএমইউর ফার্মাকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান খসরু বলেন, ভ্যাকসিন সরবরাহের স্বল্পতার জন্য প্রথম ডোজ প্রাপ্ত ব্যক্তিকে সম্পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করণের জন্য প্রয়োজনে অন্য ভ্যাকসিন দেয়া যেতে পারে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশ এই কাজগুলো করেছে। তো আমরাও যদি এই অবস্থায় পড়ে যায় আমাদেরও বিকল্প ব্যবস্থা করতে হবে। বিজ্ঞানের তত্ত্বীয় জ্ঞ্যানের ওপ ভিত্তি করে একটা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে।
যদিও এ নিয়ে রয়েছে ভিন্নমত। আইইডিসিআর পূর্ণাঙ্গ গবেষণা না হলে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া ঠিক হবে না। আর আপাতত দুই কোম্পানির দুই ডোজ নিয়ে ভাবছেনা সরকার। মজুত শেষ হওয়ার আগেই প্রয়োজনীয় টিক আসবে বলেও জানায় তারা। তবে ১০ মে চীনের যে ৫ লাখ ডোজ টিকা আসবে তা নতুনভাবে ব্যবহার করতে হবে।
আইইডিসিআর উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, পরবর্তী কোনো বৈজ্ঞানিক তথ্য না আসা পর্যন্ত আমাদের সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে প্রথম ডোজ যে কোম্পানির টিকা থেকে দেয়া হয়েছে দ্বিতীয় ডোজ সেই একই কোম্পানির টিকা দিয়ে দিতে হবে।
বিশ্বজুড়ে ভ্যাকসিন সংকটের প্রেক্ষিতে মডার্না সঙ্গে ফাইজার আর অ্যাস্ট্রাজেনেকার সঙ্গে স্পুটনিক-ভি মিক্সড করে নতুন ডোজ নিয়ে গবেষণা করছে যুক্তরাষ্ট্র নেদারল্যান্ডসহ বেশকিছু দেশ।
সান নিউজ/এসএম