সান নিউজ ডেস্ক :
করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত নিম্নআয়ের পেশাজীবী, কৃষক এবং প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য তিন হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এ তহবিলের অর্থ করোনাভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্ত নিম্নআয়ের পেশাজীবী, কৃষক ও প্রান্তিক বা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের মাঝে বিতরণ করবে ক্ষুদ্রঋণদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো।
এনজিওগুলো মাত্র সাড়ে ৩ শতাংশ সুদে এ তহবিল থেকে অর্থ নিয়ে গ্রাহক পর্যায়ে সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ সুদে ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে বিতরণ করতে পারবে।
সোমবার এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করে ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়।
সার্কুলারে বলা হয়েছে, এরই মধ্যে খেলাপি হিসেবে চিহ্নিতরা বিশেষ এ তহবিল থেকে ঋণ পাবেন না। তহবিল থেকে ১ শতাংশ সুদে ঋণ পাবে তফসিলি ব্যাংক। ব্যাংকগুলো থেকে সর্বোচ্চ সাড়ে ৩ শতাংশ সুদে ঋণ পাবে ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান। আর ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানগুলো সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ সুদে গ্রাহক পর্যায়ে ঋণ দিতে পারবে। অর্থাৎ, গ্রাহক পর্যায়ে বিশেষ এ তহবিলের ঋণের সুদহার হবে ৯ শতাংশ।
এছাড়া তহবিল থেকে একজন গ্রাহক ঋণ পাবেন সর্বোচ্চ ৭৫ হাজার টাকা। তবে আয় উৎসাহী কর্মকাণ্ডে অন্তর্ভুক্ত ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত গ্রুপভিত্তিক অর্থায়নের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ৫ সদস্যবিশিষ্ট গ্রুপ সর্বোচ্চ ৩ লাখ টাকা ঋণ নিতে পারবে।
ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ঋণের আওতায় এককভাবে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা এবং যৌথ প্রকল্পের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ৫ সদস্য বিশিষ্ট গ্রুপের অনুকূলে সর্বোচ্চ ৩০ লাখ টাকা ঋণ পাওয়া যাবে। তবে গ্রুপের সদস্য সংখ্যা বেশি হলে ঋণের পরিমাণও আনুপাতিক হারে বাড়বে।
নীতিমালা অনুযায়ী, স্থানীয়ভাবে কৃষি এবং বিভিন্ন আয় উৎসাহী কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত শ্রেণী-পেশার স্থানীয় উদ্যোক্তা ও পেশাজীবী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বিশেষ তহবিল থেকে ঋণ নিতে পারবে। তবে অতিদরিদ্র, দরিদ্র অথবা কোনো অনগ্রসর গোষ্ঠিভুক্ত ব্যক্তি এবং অসহায় বা নিগৃহীত নারী সদস্যরা এ তহবিল থেকে ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রাধান্য পাবেন।
ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রাহকদের কাছ থেকে সপ্তাহিক বা মাসিক কিস্তিতে ঋণের অর্থ আদায় করবে। অর্থায়নকারী ব্যাংক ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানকে দেয়া তহবিল আদায়ের জন্য তিন মাসের গ্রেস পিরিয়ড দেবে। অর্থায়নকারী ব্যাংক ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে অর্থায়নকৃত অর্থ আদায় করবে।একইভাবে ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংককে অর্থায়নকারী ব্যাংকগুলো টাকা ফেরত দেবে।
গ্রাহক পর্যায়ে বিতরণকৃত ঋণ আদায়ের সব দায়-দায়িত্ব ও ঝুঁকি সংশ্লিষ্ট ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান এবং অর্থায়নকারী ব্যাংক বহন করবে। ঋণ আদায়ের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের পাওনাকে সম্পর্কিত করা যাবে না।
বিশেষ এ তহিবল থেকে নেয়া ব্যক্তিঋণের মেয়াদ হবে বিতরণের তারিখ থেকে গ্রেস পিরিয়ডসহ সর্বোচ্চ এক বছর। তবে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা পর্যায়ে বিতরণকৃত ঋণের মেয়াদ গ্রেস পিরিয়ডসহ দুই বছর হবে। গ্রাহক পর্যায়ে বার্ষিক সুদ ও সার্ভিস চার্জের হার হবে সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ, যা ক্রমহ্রাসমান স্থিতি পদ্ধতিতে হিসাবায়ন করতে হবে।
ভর্তি ফি, পাস বই, ঋণ ফরম এবং নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে অঙ্গীকারনামার খরচ ছাড়া অন্য কোনো চার্জ বা ফি আদায় করা যাবে না।