নিজস্ব প্রতিবেদক: লকডাউনের কঠোর বিধিনিষেধ জারি আছে এখনও। যা চলবে ১৬ মে পর্যন্ত। চলমান বিধিনিষেধ আরোপের আগে শনাক্তের হার ২৪ শতাংশ পর্যন্ত উঠেছিল। এখন তা ধাপে ধাপে কমে ১০ শতাংশের ঘরে নেমে এসেছে। এপ্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের দাবি দেশে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমেছে। তবে এতে আত্মতুষ্টিতে ভোগার সুযোগ নেই।
সোমবার (৩ মে) কোভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতর আয়োজিত ভার্চুয়াল স্বাস্থ্য বুলেটিনে অধিদফতরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম এ সব তথ্য জানিয়েছেন।
অন্যান্য স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরাও বলছেন, সংক্রমণ ও মৃত্যু কমলেও খুশি হওয়ার কিছু নেই। বিধিনিষেধ ঢিলেঢালা হলেই আবার সংক্রমণ বেড়ে তৃতীয় ঢেউয়ে রূপ নিতে পারে। তাই মাস্ক পরা ও স্বাস্থ্যবিধি মানার ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছেন তারা।
অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, করোনার যে দ্বিতীয় ঢেউ আমাদের মধ্যে এসেছিল, সেটি কমতে শুরু করেছে। আমরা যদি সর্বশেষ গতকাল পর্যন্ত দেখি, শনাক্তের হার ১০ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। এতে করে আমাদের আত্মতুষ্টি বা করোনা চলে গেছে, এরকম ভাবার সুযোগ নেই। এখন ঈদকে কেন্দ্র করে যেকোনো মুহূর্তে আবার করোনা সংক্রমণ বেড়ে যেতে পারে।
অধ্যাপক বলেন, আমরা দেখছি যে, বিভিন্ন শপিংমলে, বিভিন্ন দোকানে মানুষের উপচেপড়া ভিড় তৈরি হয়েছে। অনেকেই ঈদের বাজার করতে বের হচ্ছেন। সেখানে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই যে স্বাস্থ্যবিধি মানার কথা ছিল, সেটি করা হচ্ছে না। মনে রাখতে হবে স্বাস্থ্যবিধি পালনে অবহেলা করছেন মানেই কিন্তু আপনারা আশপাশ থেকে সংক্রমিত হয়ে পরিবার ও নিকটজনকে বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারেন। আমরা দেখছি অনেকেই বাইরে এসে মাস্ক খুলে ইফতার খাচ্ছেন, ভাবছেন এতে করে বিপদের আশঙ্কা নেই। এতেও সংক্রমণের আশঙ্কা রয়েছে। আপনারা বাইরে এসে খাবার গ্রহণ একেবারেই এড়িয়ে চলুন। বাইরে এসে কোনো অবস্থাতেই যেন মাস্ক খোলা না হয়, সঠিক নিয়মে যেন সেটি ব্যবহার করা হয়। শারীরিক দূরত্বও যেন মেনে চলা হয়, সেদিকে খেয়াল রাখুন।
তিনি আরও বলেন, আমরা যে বিধিনিষেধের কথা বলছি, এটা কিন্তু আমাদের সবাইকে মিলেমিশে করতে হবে। কাঁচাবাজার, দোকানপাট, শপিংমল, রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষ যারা আছেন প্রত্যেকে যদি বিধিনিষেধগুলো প্রতিপালন করেন এবং স্বাস্থ্যবিধি সংক্রান্ত নির্দেশনাগুলো নির্দিষ্ট স্থানে ঝুলিয়ে রাখেন এবং নিজেরা সচেতন থাকেন তাহলে কাজটি সহজ হয়ে যায়।
টিকা প্রসঙ্গে অধিদফতরের এই মুখপাত্র বলেন, আমরা ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে যে পরিমাণ টিকা প্রত্যাশা করেছিলাম, সেটি এখনও পাইনি। সেটি যোগাড় করার জন্য বিভিন্নভাবে যোগাযোগ চলছে। ভারতের বাইরে যেসব দেশে অক্সফোর্ডের টিকা উৎপন্ন করা হয়, সেগুলোতেও যোগাযোগ চলছে। প্রথম ডোজ নেওয়ার পর পরিস্থিতির কারণে যাদেরকে অন্য জেলায় যেতে হচ্ছে এবং থাকতে হচ্ছে, তাদের জন্য দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ সহজ করা হয়েছে। এখন থেকে এক জেলা থেকে আরেক জেলায় গিয়েও দ্বিতীয় ডোগ গ্রহণ করা যাবে। বিশেষ করে ঢাকার উত্তর এবং দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের যেসব প্রতিষ্ঠানে নেওয়া যাবে, সেগুলো হচ্ছে- কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি, জাতীয় নাক-কান-গলা ইনস্টিটিউট, শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট এবং মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। তবে জেলার ভেতরে পরিবর্তন করতে চান, তাদের ব্যাপারে সম্ভব হবে না।
সাননিউজ/এমআর/