নিজস্ব প্রতিবেদক:
বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের অর্থনৈতিক প্রভাব মোকাবিলায় দেশের সব খাতই সরকারের প্রণোদনায় থাকবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার সকালে ঢাকা বিভাগের কিশোরগঞ্জ, টাঙ্গাইল, গাজীপুর ও মানিকগঞ্জ এবং ময়মনসিংহ বিভাগের ময়মনসিংহ, শেরপুর, জামালপুর ও নেত্রকোনা জেলার প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা বৃহৎ শিল্প থেকে শুরু করে সব ধরনের শিল্প খাত এবং কৃষি খাতের জন্যও প্রণোদনা দিয়েছি। আমরা বিভিন্ন খাতে মোট ৯৫ হাজার ৬১৯ কোটি টাকার প্রণোদনা ঘোষণা করেছি। কোনো খাত প্রণোদনা থেকে বাদ পড়বে না।
তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে সারাবিশ্বের প্রায় আড়াইশ কোটি মানুষ ঘরবন্দি। সারাবিশ্বের অর্থনীতি থমকে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশও বিশ্বের একটি দেশ। তাই বাংলাদেশেও এর প্রভাব রয়েছে। তবে আমরা অর্থনৈতিক প্রভাব মোকাবিলায় এরই মধ্যে ব্যবস্থা নিয়েছি। আমরা প্রণোদনা ঘোষণা করেছি।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, আমরা ধাপে ধাপে রফতানিমুখী খাত, বৃহৎ শিল্প, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প থেকে শুরু করে সব ধরনের ব্যবসায়ীর জন্য প্রণোদনা ঘোষণা করেছি। পরে কৃষি খাতের জন্য প্রণোদনা দিয়েছি। এই প্রণোদনা কেবল ধান চাষিদের জন্য নয়, মৎস্য-পোল্ট্রি-ডেইরি সব খাতকে প্রণোদনার আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। কেউ প্রণোদনার আওতা থেকে বাদ পড়বে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই এপ্রিল মাসটা একটু কঠিন হবে। আগেই বলেছিলাম এই মাসে সাবধানে থাকতে হবে। যেখানে যখন প্রয়োজন লকডাউন করা হচ্ছে। দেশের কথা মানুষের কথা চিন্তা করে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়েছে। মানুষ যেন সংক্রামিত না হয় সে জন্য সকল পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সবাই সচেতন হলে করোনা থেকে বাঁচা সম্ভব। আমরা আরেকটু সচেতন হলেই করোনা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।
দেশের এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে সেদিকে দৃষ্টি দিতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, করোনার কারণে সারা বিশ্ব আজ আতঙ্কিত। আমার মনে হয় সারাবিশ্বে আগে কখনো এমন পরিস্থিতি দেখেনি। করোনায় গোটা বিশ্বের অর্থনীতি স্থবির। বন্ধ রয়েছে মসজিদ-মন্দির-গির্জাসহ সব প্রার্থনার কেন্দ্র। এই সংকটে দেশে যেন খাদ্যর সমস্যা না হয় সেজন্য সব জমিতে ফসল ফলাতে হবে। এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদী না থাকে।
সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, কেউ মারা যাক আমরা চাই না। বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের পরিস্থিতি ভালো আছে। সবাই যদি সচেতন থাকেন তাহলে করোনা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
সংবাদ সম্মেলনে করোনায় আক্রান্ত হয়ে যারা মারা গেছেন তাদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে শোকসন্তুপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান সরকারপ্রধান।
ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মতবিনিময়ের জেলাগুলো হচ্ছে- ঢাকা বিভাগের মানিকগঞ্জ, গাজীপুর, টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ এবং ময়মনসিংহ বিভাগের জামালপুর, শেরপুর, নেত্রকোনা এবং ময়মনসিংহ সদর।
বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারসহ বেসরকারি টিভি চ্যানেল এবং রেডিও স্টেশনগুলো এই ভিডিও কনফারেন্স সরাসরি সম্প্রচার করবে।
এর আগে শেখ হাসিনা করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে তিন দফা পৃথক ভিডিও কনফারেন্সে ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, সিলেট এবং বরিশাল বিভাগের ৪০টি জেলার সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন।