রাসেল মাহমুদ : গত বছর দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে শুরু করেন চিকিৎসক, নার্স, পুলিশসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। যারা অগ্রভাগে থেকে করোনার চিকিৎসারসহ বিভিন্ন সেবা করেছেন তাদের ‘ফ্রন্টলাইনার’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়। আর দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে এ পর্যন্ত অনেক ফ্রন্টলাইনার মৃত্যুবরণ করেছেন। এরমধ্যে সরকারি প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী গত ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন ১৩২ জন ফ্রন্টলাইনার। এরমধ্যে চিকিৎসক ১৩ জন, নার্স ১৮ জন, পুলিশ ৬৮ জন, অন্যান্য কর্মকর্তা ১৫ জন এবং জনকর্মী ১৮। শতকরা হারে ডাক্তার আর নার্সের পরিমাণ হচ্ছে ২৩ দশমিক ৪৮ শতাংশ, পুলিশ ৫২ শতাংশ।
অর্থ বিভাগের সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র বলছে, মারা যাওয়া ১৩২ জনই ৩৭.৫০ লক্ষ টাকা থেকে শুরু করে ৫০ লাখ পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন।
জানা গেছে, সরকার শোকাহত পরিবারের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিপূরণ দিয়েছে পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের। এরা করোনোভাইরাস সংক্রমণে মারা যাওয়া ফ্রন্টলাইনারের মোট সংখ্যার ৫২ শতাংশ। ভাইরাসে ২০,০০০ পুলিশ আক্রান্ত হয়েছেন। আর মারা গেছেন ৯০ জন। গত এক বছরে মোট চিকিৎসক মারা গেছেন ১৫২ জন।
সরকারি শর্তাবলী অনুসারে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুসরণ করে এ ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন আর্থিক বিভাগের কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে সর্বাধিক সংখ্যক পুলিশ সদস্যের ক্ষতিপূরণের প্রস্তাব পেয়েছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, এছাড়াও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আমাদের কম সংখ্যক ডাক্তার এবং নার্সকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রস্তাব সরবরাহ করেছে। মৃত্যুর কারণ শনাক্ত প্রক্রিয়ায় কিছুটা সময় সাপেক্ষ। ফলে ক্ষতিপূরণ দিতে দেরি হয়।
ওই কর্মকর্তা আরও জানান, ক্ষতিপূরণ তহবিল থেকে সচিব, চিকিৎসক, নার্স, পুলিশ ও অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ মোট ১৩২ জনকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য সরকার মোট ৬১ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয় করেছে।
সূত্র জানিয়েছে, স্বাস্থ্য ঝুঁকি ক্ষতিপূরণের জন্য বিশেষ অনুদানের জন্য ২০২০-২১ বাজেটে বরাদ্দ ৫০০ কোটি টাকা থেকে এ ব্যয় মেটানো হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে স্বাস্থ্যসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশিদ আলম বলেছেন, আমরা মৃত চিকিৎসক ও নার্সদের ক্ষতিপূরণ প্যাকেজ প্রক্রিয়ায় কেন দেরি হচ্ছে তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি।
জানা গেছে, করোনাভাইরাসে ডাক্তারদের মধ্যে প্রথম মারা যান মইন উদ্দিন। গত বছরের ১৫ এপ্রিল তিনি মারা যান।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনা রোগী শনাক্ত হয়। পরে সরকার প্রথম সারির কর্মচারীদের জন্য ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করে। এতে মৃত্যুবরণকারীর পরিবার ২৫ লক্ষ টাকা থেকে ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ পাবে।
সাননিউজ/আরএম/এসএম