লোটন আচার্য্য, সাভার : এক হাজার একশ ছত্রিশ জনের তাজা প্রাণ আর কয়েক শতাধিক শ্রমিকের পঙ্গুত্ব বরণের কূপ ছিল রানা প্লাজা । এক সময় ৯ তলা ভবন জুড়েই থাকতো কোলাহল ও কর্মচঞ্চল্যতা। তবে এখন অনেকটাই ডুবায় পরিণত হয়েছে। আর সামনের পাশে অবৈধ দোকানিদের দখলে প্রতিযোগিতা । সে সাথে অবৈধ ট্র্যাক্সি স্ট্যান্ড ও ড্রাইভাররা গল্প গোজবের স্থান বেঁছেছে রানা প্লাজার স্মৃতিস্তম্ভে। তবে শ্রমিকদের দাবি অবৈধভাবে দখলদার উচ্ছেদ ও স্মৃতিস্তম্ভের রক্ষণাবেক্ষণের ।
সরেজমিনে দেখা যায়, রানা প্লাজা সামনের জমিগুলোতে অবৈধভাবে দোকান নির্মাণ ও ট্যাক্সি স্ট্যান্ডে কাজে ব্যবহার করছে । অন্যদিকে ক্ষেপের অভাবে অলস সময় পার করা ট্যাক্সি ড্রাইভাররা স্মৃতিস্তম্ভে বসে আবার কেউ পা তুলে দাঁড়িয়ে গল্প গুজবে মেতেছে ।
রানা প্লাজার শ্রমিক নাসির জানান , ২০১৩ সালে ২৪ শে এপ্রিল সকালে রানা প্লাজার নয় তলা ভবন ধসে পড়ে । এতে প্রাণ হারায় ১ হাজার ১শ ৩৬ জন এবং কয়েক হাজার শ্রমিক আহত হয়ে মানবেতন জীবন যাপন করছে । তাদের স্মরণে একটি স্মৃতিস্তম্ভ হলেও দেখভালের দায়িত্বে নেই কেউ । আবার অবৈধভাবে দোকান বসিয়ে দখল করে নিচ্ছে রানা প্লাজার জমি ।
তবে এব্যাপারে অবৈধভাবে দখলকারী দোকানীদের সাথে কথা বলতে চাইলে কেউ প্রতিবেদকের সাথে কথা বলতে রাজি হয়নি ।
অন্যদিকে মহাসড়কের জমি ও রানা প্লাজা স্মৃতিস্তম্ভের খালি জায়গায় গড়ে ওঠেছে অবৈধ ট্যাক্সি স্ট্যান্ড । সেখানে জামাল নামের এক ড্রাইভারের সভাপতিত্বে গড়ে ওঠেছে ট্যাক্সি স্ট্যান্ডটি । সেই সাথে ড্রাইভারদের অবসর সময় কাটে স্মৃতিস্তম্ভে বসে গল্প গোজব করে ।
এবিষয়ে ওই ট্যাক্সি ট্যান্ডের সভাপতি জামাল জানান, ‘ড্রাইভাররা আসলে বুঝে নাই । তাদের কে আমি ওয়ার্নিং দিয়ে দিবো । যাতে তারা এতুটুকু জায়গা ছেড়ে বসে।
এদিকে সাভার হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি ) সাজ্জাদ করিম খান জানান, এরআগে একাধিক বার ওই ট্যাক্সি স্ট্যান্ড উচ্ছেদ করা হয়েছে । তাদেরকে রেকার বিলও করেছি । কিন্তু কিছু দিন বন্ধ করে ঘুরে ফিরে আসা শুরু করে । তবে তিনি ট্যাক্সি স্ট্যান্ডের বিরুদ্ধে আইনুনগত ব্যবস্থা নেওয়া কথা জানান ।
তবে এনিয়ে ক্ষোভের কথা জানান রানা প্লাজার গার্মেন্ট শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ইমাদুল ইসলাম (এমদাদ) । তিনি বলেন , রানা প্লাজার নিহত শ্রমিকদের স্মরণে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হয়েছিল । তবে কোনও মর্যাদা নেই , সেই স্মৃতিস্তম্ভের। সম্মান না করে অবহেলায় অরক্ষিত ভাবে রয়েছে স্তম্ভটি । স্তম্ভটি রক্ষায় মন্ত্রণালয়ে কয়েক দফায় চিঠি দেওয়া হয়েছে । সেই সাথে তিনি রানা প্লাজার সামনে দোকান গুলোতে প্রভাবশালীদের অবৈধ চাঁদাবাজি বন্ধ করে উচ্ছেদের আহ্বান জানান ।
এবিষয়ে সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো: মাজহারুল ইসলাম জানান, এখনো আমার কাছে এধরনের কোনও অভিযোগ আসেনি । তবে আগামীকাল রানা প্লাজার সামনে পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস জানিয়েছেন এই নির্বাহী কর্মকর্তা ।
সান নিউজ/আরএস