নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের রোধে দ্বিতীয় ঢেউ কমাতে গত ৫ এপ্রিল থেকে দুই ধাপের সর্বাত্মক লকডাউন চলছে। প্রথম দফার পর গত ১৪ এপ্রিল থেকে শুরু হয় লকডাউনের আদলে আট দিনের জন্য কঠোর বিধি-নিষেধ।
রোববার (১৮ এপ্রিল) এর পঞ্চম দিন চলছে। চলমান এ লকডাউন চলবে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত। তবে সংক্রমণকে বাধাগ্রসস্তে চলমান বিধি-নিষেধের মেয়াদ কমপক্ষে আরও এক সপ্তাহ বাড়ানোর কথা ভাবছে সরকার। পাশাপাশি বিধি-নিষেধ একেবারে তুলে না দিয়ে ধাপে ধাপে শিথিল করার বিষয়টি মাথায় রাখা হচ্ছে। এনিয়ে সিদ্ধান্ত আসতে পারে আগামী কাল সোমবার(১৯ এপ্রিল)।
এপ্রেক্ষিতে করোনা সংক্রমণ কোভিড-১৯ বৃদ্ধিসহ সব বিষয় সামনে রেখে লকডাউন নিয়ে কাল সোমবা ভার্চুয়ালি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা হবে। সেখানে তথ্য ভিত্তিক সার্বিক আলোচনা হবে। তারপর লডকাউনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তারা অংশ নেবেন। লকডাউন বাড়ানোর বিষয়ে এই সভায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এরইমধ্যে বিষয়টি গণমাধ্যমকে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন জানিয়েছেন।
স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় সূত্রে জানা যায়,করোনা বাড়ানোর ইতিমধ্যে কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে লকডাউন বাড়ানোর সুপারিশ করেছে। অপরদিকে পবিত্র রমজানে দোকান পাট, শপিংমল খোলারাখাসহ বিভিন্ন পেশাজীবীর পক্ষ থেকে লকডাউন শিথিল করার চাপও রয়েছে। এনিয়ে আগামী ২২ এপ্রিল থেকে মার্কেট ও দোকান খুলে দেওয়ার দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানাতে রোববার (১৮ এপ্রিল) সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি। সামনে ঈদুল ফিতর। লকডাউন দীর্ঘমেয়াদী হলে অন্যান্য পেশাজীবীদের আন্দোলনে নামার আশঙ্কা রয়েছে বলেও সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, একেক এলাকায় একেক ধরনের প্রকোপ ও আক্রান্তের হার। সববিষয় ধরে তথ্য ভিত্তিক আলোচনার পর প্রধানমন্ত্রীর কাছে সুপারিশ যাবে।তারপর তিনি লকডাউনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবেন।
তিনি বলেন, আমাদের মধ্যে সবাই যদি মাস্ক পরতো এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতো তাহলে এতো সংক্রমণ হতো না। যতক্ষণ পর্যন্ত করোনা জিরোতে না যাবে ততদিন পর্যন্ত নিজস্ব সুরক্ষার জন্য প্রত্যেককে ডাবল মাস্ক পরতে হবে এবং শারিরীক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
মন্ত্রণায়ল সূত্রে জানা গেছে, এবারের লকডাউনে কিছু বিধি নিষেধে পরিবর্তন আসতে পারে। এলাকা ভিত্তিক কড়া লকডাউন দেওয়া হতে পারে কিংবা শিথিল করা হতে পারে। জাতীয় বিশেষজ্ঞ কমিটিও এ বিষয়ে সরকারের কাছে মতামত তুলে ধরেছে। তাদের মতামত, সব জায়গায় করোনা সংক্রমণ প্রকোপ এক রকম নয়। কোথাও বেশি কোথাও কম। তাহলে কেন সব এলাকা লকডাউনের আন্ডারে আসছে।
আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে এ বিষয়ে বিশ্লেষণ করা হবে। আলাপ আলোচনার পর এলাকাভিত্তিক লকডাউন কিংবা এলাকাভিত্তিক লকডাউন শিথিল করার সিদ্ধান্ত আসতে পারে।করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে এ অবস্থায় লকডাউন শিথিল করা হবে নাকি আরও কড়া হবে এমন এক প্রশ্নে জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন,আসলে শিথিল হবে নাকি আরও কড়া হবে সবকিছু নির্ভর করছে অনেকগুলো প্রসঙ্গের ওপর। বিভিন্ন ধরনের পয়েন্ট আছে, মতামত আছে সবগুলো মতামত বাস্তবতার নিরিক্ষে আলোচনা হবে।
সাননিউজ/এমআর