নিজস্ব প্রতিবেদক: শ্রমিকের কাছে লকডাউন আতঙ্কর এক নাম। সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের নেতারা। তারা বলছেন,দেশের মোট শ্রম শক্তির প্রায় ৮২ শতাংশ শ্রমিক যারা অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কাজ করে এবং দিন এনে দিন খায়।লকডাউনে এই শ্রমিকরা সম্পূর্ণ উপার্জনহীন হয়ে পড়ায় করোনায় মৃত্যুর চেয়ে ক্ষুধার জ্বালা তাদের কাছে বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই কর্মহীন এই শ্রমজীবী মানুষদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা না গেলে লকডাউন দিয়ে করোনা সংক্রমণ রোধের চেষ্টা ব্যর্থ হবে।
মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে তারা একথা বলেন। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের কর্মহীন শ্রমিকদের খাদ্য ও নগদ সহায়তা এবং কর্মরত শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও ঝুঁকি ভাতা দেওয়ার দাবি জানানো হয়।
সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব বুলবুলের সঞ্চালনায় বিক্ষোভ কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন সাংগঠনিক সম্পাদক খালেকুজ্জামান লিপন, অর্থ সম্পাদক জুলফিকার আলী, সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন জাতীয় শ্রমিক জোট বাংলাদেশের সভাপতি সাইফুজ্জামান বাদশাসহ আরও অনেকে।
এ সময় তারা বলেন, দেশে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে শ্রমজীবী মানুষের সংখ্যা প্রায় ৫ কোটি ১৭ লাখ। নির্ভরশীলতার হার প্রায় ৪৮ শতাংশ। আর ৪.৫ শতাংশ বেকার এবং তাদের ওপর নির্ভরশীলদের যুক্ত করলে লকডাউনে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় পরা শ্রমজীবী মানুষের সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় ৮ কোটি। এই মানুষদের এক মাসের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজন হবে সর্বোচ্চ ২০ হাজার কোটি টাকা আর খাদ্য বহির্ভূত জরুরি প্রয়োজনের জন্য আরও ১৬ হাজার কোটি টাকা অর্থাৎ মোট ৩৬ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হলে ৮ কোটি শ্রমজীবী মানুষকে খাদ্য নিরাপত্তা দিয়ে এক মাস ঘরে রেখে লকডাউন কার্যকর করা সম্ভব।’
জীবনের ঝুঁকি নিয়ে উৎপাদনের চাকা সচল রাখার কাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের জন্য ঝুঁকি ভাতা, করোনা পরীক্ষা, টিকা এবং স্বাস্থ্যবিধির যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘কর্মরত কোনো শ্রমিক করোনায় আক্রান্ত হলে কারখানা মালিককে তার চিকিৎসা এবং যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। করোনার অজুহাতে শ্রমিকদের বেতন-ভাতার কোনোরকম কর্তন কিংবা শ্রমিক ছাঁটাই-শ্রমিক হয়রানি করা হলে লকডাউন শ্রমিকদের প্রতিবাদ আন্দোলনকে আটকাতে পারবে না।
সাননিউজ/এমআর/