নিজস্ব প্রতিবেদক:
ডাক্তার, নার্স বা স্বাস্থ্যকর্মীদের যেসব বাড়ির মালিক বাড়ি ছাড়ার নির্দেশ দিচ্ছেন তাদের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ।
তিনি বলেন, ডাক্তার, নার্স বা স্বাস্থ্যকর্মীদের যেসব বাড়ির মালিক বাড়ি ছাড়ার নির্দেশ দিচ্ছেন প্রয়োজনে তাদের বাড়ি নির্মাণের অর্থের উৎস খুঁজে দেখা হবে তাদের।
১৬ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, জাতির এই সঙ্কটময় সময়ে ডাক্তার, নার্স, ওয়ার্ডবয় এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী জীবনের মায়া ত্যাগ করে জাতির সেবায় নিয়োজিত। এদের সঙ্গে খারাপ আচরণ কিংবা কোনো ধরনের অসম্মান করা আইনগতভাবেই অপরাধ।
এ ধরনের অপরাধে আইনি শাস্তির কথা উল্লেখ করে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, আমার যতটা মনে পড়ে, দেশে বিদ্যমান ‘সংক্রামক রোগ আইন, ২০১৮’ অনুসারে এ জাতীয় আচরণ শাস্তিযোগ্য অরপরাধ। কেউ যদি এই আইনের লঙ্ঘন করে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
তিনি আরো বলেন, এরপরও যদি কোনো বাড়ির মালিক স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত কোনো ব্যক্তিকে বাড়ি ছাড়ার কথা বলেন বা বাড়ি ছাড়তে বাধ্য করেন, তাহলে দুদক আইন অনুযায়ী এসব বাড়ি নির্মাণের অর্থের উৎস খুঁজে দেখবে। অবৈধ সম্পদের উৎস পেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবে।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন,সরকারি ত্রাণ আত্মসাতের ঘটনায় সারাদেশে এ পর্যন্ত চারটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। কমিশন থেকে এই মামলাগুলোর তদন্ত দ্রুত শেষ করে চার্জশিট দাখিলের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আসামিদের শাস্তি নিশ্চিত করতে প্রসিকিউটিং সংস্থা হিসেবে দুদক সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এ দায়িত্ব পালন করবে বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, ঢাকা, মানিকগঞ্জ এবং বগুড়ার চারটি ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এরইমধ্যে কমিশন থেকে এসব মামলার তদন্ত সম্পন্ন করে দ্রুত চার্জশিট দাখিলের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, কমিশন থেকে অন্তত দুইবার সংশ্লিষ্টদের সতর্ক করে বলা হয়েছিল- জাতির এই সঙ্কটময় মুহূর্তে সরকারের সামাজিক নিরাপত্তামূলক কর্মসূচির ত্রাণ বা অন্য কোনো সহায়তা নিয়ে কেউ নয়-ছয় করবেন না। তারপরও কিছু ব্যক্তি তাদের লোভ সংবরণ করতে পারলেন না। কমিশনের নিজস্ব গোয়েন্দাসহ বিভিন্ন উৎস হতে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, দেশের কয়েকটি জায়গায় ত্রাণের চাল যথাস্থানে রাখা হয়নি। তালিকা প্রস্তুতিতে অনিয়ম-দুর্নীতি বা ত্রাণ আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে। তবে একথাও সত্য, দেশব্যাপী এ জাতীয় ঘটনা ঘটেনি। কমিশন এ পর্যন্ত চারটি জায়গায় এ জাতীয় ঘটনার সত্যতা পেয়েছে।
দুদক চেয়ারম্যান আরো বলেন, জাতির এই ক্রান্তিকালে সম্মিলিত প্রয়াস ছাড়া এ জাতীয় মহামারি নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন।
ভবিষ্যৎ ত্রাণ কার্যক্রম নিয়ে কমিশনের বক্তব্য জানতে চাইলে ইকবাল মাহমুদ বলেন, অতীতেও আমরা বারবার স্মরণ করিয়ে দিয়েছি, ত্রাণ কাজে দুর্নীতি করলে কঠিন পরিণতি ভোগ করতে হবে। আজও বলছি, ত্রাণ কাজে অন্যায় করলে মামলা বা গ্রেফতারের মতো আইনি কার্যক্রম চলবে। দ্রুততর সময়ে চার্জশিট দাখিল করে অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিতকল্পে বিচারিক কর্মপ্রয়াসে দুদক সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত থাকবে। এ জাতীয় অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিতকল্পে সম্ভাব্য সব ব্যবস্থা গ্রহণ করবে দুদক।
সান নিউজ/সালি