নিজস্ব প্রতিবেদক: সামগ্রিকভাবে দেশ এগিয়ে যাওয়ার চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আজকের এই উত্তরণের পথ মোটেই মসৃণ ছিল না। দেশের ভেতরে-বাইরে স্বাধীনতা এবং মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তি বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে নানা অপতৎপরতা চালিয়েছে।
অগ্রযাত্রা ব্যাহত করার প্রক্রিয়া এখনো অব্যাহত আছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের সবাইকে অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে দেশবিরোধী সব অপতৎপরতা রুখে দাঁড়াতে হবে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর ধারণ করা ভাষণটি একযোগে প্রচারিত হয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে।
পঁচাত্তরপরবর্তী সরকারগুলোর সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫-পরবর্তী অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী অগণতান্ত্রিক শাসকেরা বাংলাদেশকে আদর্শচ্যুত করেছে। দীর্ঘ একুশ বছর এদেশের মানুষকে ধোঁকা দিয়েছে। জনগণের সম্পদ লুণ্ঠন করে তাদের অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থানের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত রেখেছে। বাংলাদেশকে ভিক্ষুকের দেশ হিসেবে বহির্বিশ্বে পরিচিত করেছে।
দেশ গঠনে বঙ্গবন্ধুর অবদানের কথা তুলে ধরে তার কন্যা বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শুধু একটি স্বাধীন-সার্বভৈৗম ভূখণ্ডেরই স্বপ্ন দেখেননি, তিনি স্বপ্ন দেখতেন এ জনপদের সাধারণ মানুষ, যারা শত শত বছর ধরে শোষণ-বঞ্চনা, নিপীড়ন-নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, না-খেয়ে না-দেয়ে, রোগে-শোকে মারা গেছে, তাদের দুঃখ-দুর্দশা দূর করতে। তাদের অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থান-চিকিৎসার ব্যবস্থা করে উন্নত জীবন নিশ্চিত করতে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের দুর্ভাগ্য মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় স্বাধীনতা বিরোধী কুচক্রী মহল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে সপরিবারে হত্যা করে। তাকে হত্যার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রাকে যেমন স্তব্ধ করে দেয়া হয়েছিল, তেমনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধূলিস্যাৎ করে দেয়া হয়।
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শুধু স্বপ্ন দেখতেন না, কী করে স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে হয় তা তিনি জানতেন। স্বাধীনতার পর একেবারে শূন্য হাতে মাত্র সাড়ে তিন বছরে ধ্বংস-প্রাপ্ত রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট, রেললাইন, পোর্ট সচল করে অর্থনীতিতে গতি সঞ্চার করেন। ১২৬টি দেশের স্বীকৃতি ও ২৭টি আন্তর্জাতিক সংস্থার সদস্যপদ লাভ করে বাংলাদেশ। বাংলাদেশকে তিনি স্বল্পোন্নত দেশের কাতারভুক্ত করেন।
প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে দেশের অভ্যন্তরে এবং বাইরে বসবাসকারী বাংলাদেশের সব নাগরিককে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। তিনি কৃতজ্ঞতাভরে স্মরণ করেন সেইসব বন্ধু রাষ্ট্র, প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তিকে যারা আমাদের চরম দুঃসময়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন।
এবারের স্বাধীনতা ভিন্ন আবহ নিয়ে এসেছে জানিয়ে তিনি বলেন, জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীকে সামনে রেখে আমাদের দেশকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার নতুন করে শপথ নিতে হবে।
সান নিউজ/আরআই