নিজস্ব প্রতিবেদক: দেওয়ান প্রোপার্টিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাকসুদ দেওয়ান ছিদ্দিককে ভয় দেখানোর মামলায় তিন আসামিকে ব্যতিক্রমী সাজা দিয়েছেন আদালত।
ব্যবসায়িক লেনদেন সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ভয় দেখানোর এই মামলায় ভালো ব্যবহার ও বৃক্ষরোপণ করতে আসামিদের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম মাহমুদা আক্তার আসামিদের উপস্থিতিতে সোমবার (২২ মার্চ) এ রায় ঘোষণা করেন।
ব্যাতিক্রমী সাজা পাওয়া এই তিন আসামি হলেন, দেওয়ান প্রোপার্টিজের অপর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জুয়েল হোসেন দেওয়ান, মানিক হোসেন দেওয়ান এবং মুজাহিদুল ইসলাম।
মামলার রায়ে বলা হয়েছে, আসামিদের ছয় মাস প্রবেশন অফিসারের তত্ত্বাবধানে থাকতে হবে। এ সময় আসামিরা কোনো ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়াবেন না বা একই ধরনের অপরাধ আর করবেন না। তারা শান্তি বজায় রাখবেন ও ভালো ব্যবহার করবেন। তাদের মধ্যে বিদ্যমান বিরোধ আপস-মীমাংসার মাধ্যমে নিষ্পত্তি করবেন। আদালত এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তলব করলে যথাসময়ে উপস্থিত হবেন। প্রবেশনকালে আসামিরা ১০টি গাছ ( ৫টি বনজ ও ৫টি ফলদ) রোপণ করবেন।
প্রবেশনকালে আসামিরা এসব শর্ত ভঙ্গ করলে বা তাদের আচরণ সন্তোষজনক না হলে প্রবেশন আদেশ বাতিল হবে বলে জানিয়েছেন বিচারক। তখন তাদের ছয় মাস কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
সংশ্লিষ্ট আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর আজাদ রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বিচারক উল্লেখ করেছেন, সাক্ষ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ব্যবসায়িক লেনদেন সংক্রান্ত আলোচনার জের ধরে বাদী ও আসামি জুয়েল হোসেন দেওয়ানের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। একপর্যায়ে বাদীর হাতে থাকা মোবাইল ফোনটি ভেঙে যায়। আসামিরা চিৎকার চেঁচামেচি করে ও বাদীকে ভয় দেখায়।
মামলার বিষয়বস্তু থেকে প্রতীয়মান হয় যে, বাদী ও আসামিরা পরস্পর ঘনিষ্ঠ। হাতাহাতি হয়েছিল তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে। রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে আসামিরা এমন কাজ করেছে মর্মে প্রতীয়মান হয়েছে। ক্ষণিকের উত্তেজনায় করা অপরাধ লঘু অপরাধ বলে বিবেচিত হয়। তাই আসামিদের কারাগারে না রেখে প্রবেশন অফিসারের তত্ত্বাবধানে শর্তসাপেক্ষে সংশোধনের সুযোগ দেয়া সমীচীন। যেহেতু, মামলাটি আপসযোগ্য এবং দুই পক্ষ পরস্পর আত্মীয়, তাই সাজা দেয়ার অন্যতম উদ্দেশ্যে সংশোধনের সুযোগ দেওয়া, প্রতিহিংসা নয়। সাজা দেওয়ার এই আদর্শিক বিষয় বিবেচনায় রেখে আসামিদের বয়স, পক্ষদ্বয়ের মধ্যকার সম্পর্ক ও মানসিক অবস্থা বিবেচনায় আসামিদের আইন মান্যকারী নাগরিক হিসেবে পুনর্বাসনের জন্য শর্তসাপেক্ষে নির্দিষ্ট শর্তে সংশোধনের সুযোগ দেওয়া সমীচীন মনে হয়।
ভয় দেখানো ও মোবাইল ফোন ভাঙার অভিযোগে দেওয়ান প্রোপার্টিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাকসুদ দেওয়ান ছিদ্দিক ২০১৭ সালের ৬ জুন কাফরুল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। মামলাটি তদন্ত করে একই থানার এসআই হোসনা আফরোজ ওই বছরের ১৮ জুলাই তিনজনের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিল করেন।
সান নিউজ/আরআই