নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনা মোকাবেলায় বাংলাদেশের চলমান টিকাদান কর্মসূচিকে এগিয়ে নিতে ৫০ কোটি ডলারের ঋণ অনুমোদন করেছে বিশ্বব্যাংক।
শুক্রবার (১৯ মার্চ) বিশ্বব্যাংকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিশ্বব্যাংক গ্রুপের প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট এসোসিয়েশন (আইডিএ) এ অর্থায়ন করবে। এ ঋণের আওতায় দেশের ৫ কোটি ৪০ লাখ মানুষকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্য অগ্রাধিকার পাবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সরকারের প্রথম ধাপে ৪০ শতাংশ মানুষকে টিকার আওতায় আনার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে দেশের ৩১ শতাংশ মানুষের জন্য টিকা নিশ্চিতে সহায়তা করবে বিশ্বব্যাংকের কভিড-১৯ ইমার্জেন্সি রেসপন্স এন্ড প্যানডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস প্রজেক্ট’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় দেওয়া হবে অতিরিক্ত এ অর্থায়ন।
এ অর্থায়ন নিরাপদ ও কার্যকর টিকা ক্রয় করতে, দেশের টিকা সংরক্ষণ সুবিধা বাড়াতে ও বিতরণে সরকারকে সহায়তা করবে।
বাংলাদেশ ও ভুটানে নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি টেম্বন এ প্রসঙ্গে বলেন, দেশব্যাপী টিকাদান কর্মসূচি শুরুর মাধ্যমে কভিড-১৯ প্রতিরোধে বাংলাদেশ দ্রুত উদ্যোগ নিয়েছে। টিকাদান কর্মসূচির লক্ষ্য অর্জনে মানুষের দ্রুত ও সাম্যের সঙ্গে টিকা পাওয়া জরুরি। বিশ্বব্যাংকের এ অর্থায়ন জাতীয় স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে বাংলাদেশের এক-তৃতীয়াংশ জনগণের জন্য দ্রুত টিকা সরবরাহ নিশ্চিত করবে।
প্রকল্পটি করোনা সংক্রমণ চিহ্নিত করা, প্রতিরোধ ও চিকিৎসা এবং একই সঙ্গে ভবিষ্যতে স্বাস্থ্য বিষয়ক জরুরি পরিস্থিতিতে জাতীয় স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা অব্যাহত রাখবে। এছাড়া একটি সফল টিকাদান কর্মসূচির জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণ দেবে এবং টিকা পরীক্ষায় ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের সক্ষমতা বাড়াবে।
বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র অপারেশন অফিসার ও প্রকল্পের টাস্ক টিম লিডার ইফফাত মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশের শিশুদের টিকাদান কর্মসূচি ব্যবস্থাপনায় সুদীর্ঘ ও সফল অভিজ্ঞতার আলোকে এ অর্থায়ন সেই সব মানুষের করোনা টিকা গ্রহণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে, যাদের টিকার প্রয়োজন সবচেয়ে বেশি। এছাড়া প্রকল্পটি টেস্টিং ল্যাবরেটরি স্থাপন ও জেলা পর্যায়ে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র সম্প্রসারণে সহায়তা অব্যাহত রাখবে।
অতিরিক্ত এ অর্থায়নের ফলে প্রকল্পটিতে বিশ্বব্যাংকের সহায়তার পরিমাণ দাঁড়াল ৬০০ মিলিয়ন ডলার। এর বাইরে এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার এন্ড ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি) এ প্রকল্পে ১০০ মিলিয়ন ডলার অর্থায়ন করছে।
বিশ্বব্যাংকের ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট এসোসিয়েশন (আইডিএ) থেকে ৩০ বছর মেয়াদি এ ঋণে ৫ বছরের গ্রেস পিরিয়ড (কিস্তি অব্যাহতির সময়কাল) রয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশে চলমান আইডিএ কর্মসূচির সর্বাধিক অর্থায়ন রয়েছে, যার পরিমাণ ১৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি।
বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের সহায়তায় এগিয়ে আসা প্রথম উন্নয়ন সহযোগীদের অন্যতম এবং এ দেশের স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত ৩৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি অনুদান এবং সুদবিহীন ও নমনীয় কনসেশনাল ঋণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
করোনা প্রতিরোধে টিকার জন্য দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম ধাপে যে ৩ টি দেশকে সহায়তা দেওয়া হয়েছে, বাংলাদেশ তার মধ্যে অন্যতম।
সান নিউজ/এসএ