সাংস্কৃতিক প্রতিবেদক: সারাদেশের সঙ্গে রাজধানীতেও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে ছিল নানা আয়োজন। নাচ, গান, আলোচনাসহ নানা আনন্দায়োজনে সাজানো এসব কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে মূর্ত করে তোলে নান্দনিকতায়।
আর আলোকচিত্রের প্রদর্শনী ও নাটকের মঞ্চায়নে উঠে এসেছে বঙ্গবন্ধুর জীবন-সংগ্রামের নানা অধ্যায় ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস। বুধবার (১৭ মার্চ) এভাবেই নানা বর্ণাঢ্য আয়োজনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০১তম জন্মদিন উদযাপন করেছে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ও সরকারি- বেসরকারি প্রতিষ্ঠান।
এর মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০১তম জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপনের লক্ষ্যে আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলা একাডেমি। একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনের এই আয়োজনে ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক রাশিদ আসকারী।
এতে স্বাগত ভাষণ দেন একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী। আলোচনায় অংশ নেন অধ্যাপক ড. আবু মো. দেলোয়ার হোসেন এবং কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক। সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান।
এর আগে সকাল ৭টায় বাংলা একাডেমির পক্ষ থেকে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
জাতীয় জাদুঘরের আয়োজনে জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০১তম জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষ্যে ‘বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ বিশ্লেষণ ও দিকনির্দেশনা’ শীর্ষক সেমিনার। এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. বদরুল আরেফীন।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ডা. এস এ মালেক। সভাপতিত্ব করেন জাদুঘর বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সভাপতি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। এরপর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে একক গান পরিবেশন করেন জাদুঘরের ঊর্ধ্বতন প্রশাসনিক কর্মকর্তা কালীপদ শীল।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ ও স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তীতে মাতৃভূমি সাংস্কৃতিক সংসদের আয়োজনে রাজধানীর শাহবাগ চত্বরে চলছে ‘মুজিব মানেই স্বাধীনতা’ শিরোনামের দশদিনের সাংস্কৃতিক উৎসব। বঙ্গবন্ধুর ১০১তম জন্মদিনের আগের দিন ১৬ মার্চ শুরু হয় স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষের এই উৎসব। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত উৎসবপ্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হচ্ছে নাচ, গান, আবৃত্তি ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী। সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতাকে মূর্ত করে তুলছেন শিল্পীরা। ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে শেষ হবে দশদিনের এই উৎসব।
স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তী ও মুজিবশতবর্ষ উপলক্ষে বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানের আয়োজনে নাটকসরণীখ্যাত রাজধানীর বেইলি রোডের মহিলা সমিতি মিলনায়তনে শুরু হয়েছে দশদিনের নাট্য উৎসব। মুক্তিযুদ্ধের দশটি নাটক দিয়ে সাজানো হয়েছে এই উৎসব। বুধবার (১৭ মার্চ) উদ্বোধনী সন্ধ্যায় মঞ্চায়ন হয় থিয়েটার আর্ট ইউনিটের নাটক ‘কোর্ট মার্শাল’।
অন্যদিকে বৃহস্পতিবার থেকে দশদিনের এই নাট্যোৎসবে ক্রমানুসারে মঞ্চায়ন হবে ঢাকা নান্দনিকের নাটক ‘গ্রহণকাল’, দৃশ্যকাব্যের নাটক ‘বাঘ’, শব্দ নাট্যচর্চা কেন্দ্রের নাটক ‘রাইফেল’, নাগরিক নাট্যাঙ্গণ অনসাম্বালের ‘তোরা সব জয়ধ্বনি কর’, ঢাকা পদাতিকের নাটক ‘কথা ৭১’, খেয়ালী নাট্যগোষ্ঠীর ‘কদমতলী আর্মি ক্যাম্প’, প্রাঙ্গণেমোর এর ‘কনডেমড সেল’, পদাতিক নাট্য সংসদ (টিএসসি) এর ‘কালরাত্রি’ ও থিয়েটার বেইলি রোডের নাটক ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’। স্বাধীনতা দিবস ২৬ মার্চ শেষ হবে দশদিনের এই নাট্য উৎসব।
সান নিউজ/আরআই