নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে শুরু হয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠান। বুধবার (১৭ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৪টায় এ অনুষ্ঠান শুরু হয়।
বাঙালির ইতিহাসের অনন্য এই উদযাপনের মুহূর্তে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত আছেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহামেদ সলিহ্।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত আছেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির স্ত্রী রাশিদা খানম, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টের স্ত্রী ফাজনা আহমেদ, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানাসহ সরকারের মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, দেশি-বিদেশি আমন্ত্রিত অতিথি, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাসহ সামরিক ও বেসামরিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
শিশুশিল্পীদের সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত এবং এর পরপরই শত শিশুশিল্পীর সংগীত পরিবেশনার মাধ্যমে উদ্বোধন অনুষ্ঠান শুরু হয়। প্রথমদিনের এ অনুষ্ঠান চলবে রাত ৮টা পর্যন্ত।
অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথির বক্তব্য অংশে প্রচারিত হচ্ছে চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইউশিহিদে সুগার ধারণ করা ভিডিওবার্তা।
এরপর অনুষ্ঠানে উপস্থিত সম্মানিত অতিথি হিসেবে মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতি ইব্রাহিম মোহামেদ সলিহ্ বক্তব্য দেবেন। মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টের বক্তব্যের পর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
সম্মানিত অতিথিদের ‘মুজিব চিরন্তন’ শ্রদ্ধাস্মারক উপহার দেয়ার পর সভাপতি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করবেন। এর মধ্য দিয়ে জন্মশতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানের প্রথম দিনের আলোচনাপর্ব শেষ হবে।
এরপর শুরু হবে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পর্বে ‘ভেঙেছ দুয়ার এসেছে জ্যোতির্ময়’ থিমের উপর ভিত্তি করে নির্মিত অডিও-ভিজ্যুয়ালে তুলে ধরা হবে জাতির পিতার সংগ্রামী জীবনের নানা অধ্যায়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাদ্যযন্ত্র সহযোগে অর্কেস্ট্রা মিউজিকের সঙ্গে গান পরিবেশন, বঙ্গবন্ধুকে প্রতীকী চিঠি উৎসর্গ, ‘মুজিব শতবর্ষের কার্যক্রম ফিরে দেখা’ শীর্ষক ভিডিও প্রদর্শন করা হবে।
এছাড়াও বঙ্গবন্ধুকে উৎসর্গ করে বন্ধুরাষ্ট্রের সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় প্রথম দিনে আজকের আয়োজনে থাকছে ভারতের প্রখ্যাত নৃত্যশিল্পী মমতা শঙ্করের নেতৃত্বে একটি বিশেষ পরিবেশনা। বর্ণিল আতশবাজি ও লেজার শো এর মাধ্যমে শেষ হবে প্রথম দিনের জমকালো আয়োজন।
১৭ মার্চ থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত ‘মুজিব চিরন্তন’ প্রতিপাদ্যে প্রতিদিন আলাদা থিমভিত্তিক আলোচনা অনুষ্ঠান, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, অডিওভিজ্যুয়াল এবং অন্যান্য বিশেষ পরিবেশনার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে।
অনুষ্ঠানমালায় আরও যা থাকছে
দ্বিতীয় দিন আগামীকাল ১৮ মার্চ : আয়োজনের থিম ‘মহাকালের তর্জনী’। এ অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তৃতা করবেন কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেন।
১৯ মার্চ : অনুষ্ঠান ‘যতকাল রবে পদ্মা যমুনা’। এতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে উপস্থিত থাকবেন।
২০ মার্চ : ‘তারুণ্যের আলোকশিখা’। এই অনুষ্ঠানে ওআইসির সেক্রেটারি জেনারেল ড. ইউসেফ আল ওথাইমিন শুভেচ্ছা বক্তব্য দেবেন।
২১ মার্চ : আয়োজন ‘ধ্বংসস্তূপে জীবনের গান’। এতে দেশিয় একাডেমিসিয়ানরা বক্তব্য দেবেন।
২২ মার্চ : আয়োজন ‘বাংলার মাটি আমার মাটি’। এদিন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভাণ্ডারি উপস্থিত থাকবেন। এছাড়া শুভেচ্ছা বার্তা দেবেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইউশিহিদে সুগা।
২৩ মার্চ : ‘নারীমুক্তি, সাম্য ও স্বাধীনতা’। এদিন ইউনেসকোর ডিজি উপস্থিত থাকবেন।
২৪ মার্চ : ‘শান্তি-মুক্তি ও মানবতার অগ্রদূত’। এদিন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং উপস্থিত থাকবেন। শুভেচ্ছা বার্তা দেবেন ক্যাথলিক খ্রিষ্টানদের সর্বোচ্চ ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস।
২৫ মার্চ : ‘গণহত্যার কালরাত্রি ও আলোকের অভিযাত্রা’। এদিন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী চুং সু কুয়েন এবং তাকাশি হাওয়াকাওয়ার পুত্র ওসামু হাওয়াকাওয়া শুভেচ্ছা বার্তা দেবেন।
২৬ মার্চ : আয়োজন ‘স্বাধীনতার ৫০ বছর ও অগ্রগতির সুবর্ণরেখা’। এদিন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উপস্থিত থাকবেন। পাশাপাশি রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত থাকবেন।
সান নিউজ/আরআই