নিজস্ব প্রতিবেদক: কুড়িগ্রামের সাবেক ডিসিসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে সাংবাদিক নির্যাতন মামলার কার্যক্রম স্থগিতের আবেদন খারিজ করেছে সর্বোচ্চ আদালত। ফলে আসামিদের বিরুদ্ধে মামলার কার্যক্রম চলতে আর বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বেঞ্চ রোববার (৭ মার্চ) এই আদেশ দেন। আদালতে সাংবাদিক আরিফুল ইসলামের পক্ষে ছিলেন হোসেন সগির হোসেন লিওন। তাকে সহযোগিতা করেন আইনজীবী ইশরাত হাসান।
এর আগে সাংবাদিক আরিফুল ইসলামকে নির্যাতনের ঘটনায় কুড়িগ্রামের সাবেক ডিসিসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে করা অভিযোগ এজাহার হিসেবে গ্রহণ করতে সংশ্লিষ্ট থানার ওসিকে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। আরিফুল ইসলামের করা অভিযোগপত্র অনুসারে কুড়িগ্রামের সাবেক ডিসি সুলতানা পারভীন, আরডিসি নাজিম উদ্দীন, সহকারী কমিশনার ও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিন্টু বিকাশ চাকমা ও সহকারী কমিশনার এসএম রাহাতুল ইসলামসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৩৫-৪০ জন সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে এ মামলা গ্রহণ করতে বলা হয়।
আদেশে ভ্রাম্যমান আদালত কর্তৃক সাংবাদিক আরিফুল ইসলামকে দেওয়ার সাজার কার্যক্রম ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে হাইকোর্ট। হাইকোর্টের ওই আদেশের ধারাবাহিকতায় ২০২০ সালের ৩১ মার্চ ডিসিসহ জড়িত অজ্ঞাতনামা ৩৫-৪০ জনের বিরুদ্ধে কুড়িগ্রাম থানায় ফৌজদারী মামলা দায়ের করেন সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ১৩ মার্চ মধ্যরাতে বাড়িতে হানা দিয়ে মারধর করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি আরিফুল ইসলামকে। তার বাসায় আধা বোতল মদ ও দেড়শ’ গ্রাম গাঁজা পাওয়া গেছে বলে দাবি করা হয়। এরপর গভীর রাতে জেলা প্রশাসকের অফিসে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে এক বছরের দণ্ড দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
জানা যায়, জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন একটি পুকুর সংস্কার করে নিজের নামে ওই পুকুরের নাম রাখতে চেয়েছিলেন। আরিফুল এ বিষয়ে নিউজ করার পর থেকেই তার ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন ডিসি। এছাড়া জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন অনিয়ম নিয়ে রিপোর্ট করতে চেয়েছিলেন সাংবাদিক আরিফ। এ বিষয়ে জানতে পেরে জেলা প্রশাসকের অফিস থেকে তাকে বেশ কয়েকবার ডেকে নিয়ে সতর্ক করা হয়।
এই ঘটনায় কুড়িগ্রামের ডিসি সুলতানা পারভীন, আরডিসি নাজিম উদ্দিন, সহকারী কমিশনার রিন্টু বিকাশ চাকমা ও এসএম রাহাতুল ইসলামকে প্রত্যাহার করা হয়।
সান নিউজ/এসএস