নিজস্ব প্রতিবেদক : মহামারি করোনাভাইরাসের শুরু থেকেই বছরজুড়ে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ছিলেন বন্দিশিবিরে। গণভবনের জীবনকে তিনি নিজের আরেকটা বড় জেলখানার সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। অবশেষে সেই তিনি আজ মুক্ত খোলা আকাশের নিচে। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
৭ মার্চ স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধুর টানে স্বশরীরে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে এসে নিজেকে বন্দিদশা থেকে মুক্ত করলেন।
রোববার (৭ মার্চ) ঐতিহাসিক ৭ মার্চে জাতির পিতার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে সকাল সাতটায় রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে আসেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন ছোট বোন শেখ রেহানা।
এইতো সেইদিনও দলের আলোচনা সভায় গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে তিনি বলেছিলেন, খুব কষ্ট লাগছে, দুঃখ লাগছে। সবাই বসে আছে, স্ক্রিনে দেখতে পাচ্ছি, আর আমি দূরে বন্দিশিবিরে আরেকটা জেলখানার মতো বসে আছি। সেটাই আমার দুঃখ। ২০০৭ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত ছিলাম ছোট জেলে, এখন বড় জেলে আছি।
প্রসঙ্গত: প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ ঠেকাতে ২০২০ সালের ২৬ মার্চ থেকে সারাদেশে অঘোষিত লকডাউন শুরু হয়। এরও আগে থেকেই গণভবনে কার্যত বন্দি হয়ে পড়েন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ভার্চুয়াল মাধ্যমে সংযুক্ত হয়ে কর্মসম্পাদনা করেন। চলমান ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে গত ২৭ জানুয়ারি সারাদেশে ভ্যাকসিন প্রয়োগ কর্মসূচি শুরু হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বৃহস্পতিবার (৪ মার্চ) বিকালে গণভবনে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন গ্রহণ করেন। ভ্যাকসিন গ্রহণের মাত্র ৩ তিনদিন পরেই প্রথমবারের মত স্বশরীরে গণভবনের বাইরে আসলেন তিনি।
বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ বাঙালির পরাধীনতার শৃঙ্খল মোচনের চূড়ান্ত প্রেরণা। এইদিনটি বিশ্ব ঐতিহ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রামাণিক দলিল। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বাঙালি জাতির ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা একটি অবিস্মরণীয় দিন।
আজ সেই দিনটি এসেছে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীকালে এক মহিমান্বিত ইতিহাসের বাকবদলের স্বরণীয় মুহূর্ত হয়ে। এই দিন ইতিহাসের প্রবহমান কল্লোলের মধ্যে লুকিয়ে ছিল একটি জাতির আকাঙ্খা,স্পৃহা সঞ্জীবনী মন্ত্র ও স্বাধীনতার চূড়ান্ত স্বপ্ন।
আজ থেকে ৫০ বছর আগে এই দিনে তৎকালীন ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক উত্তাল জনসমুদ্রে তাঁর বজ্রনির্ঘোষ কণ্ঠে , ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম ঘোষণা দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পথ রচনা করেছিলেন। সেই পথ ধরেই বাঙ্গালীজাতি রক্তক্ষয়ী ৯ মাসের যুদ্ধের মধ্যদিয়ে ইতিহাসে প্রথম বাঙ্গালী জাতিরাষ্ট্রের জন্মদিতে সক্ষম হয়। সেই থেকে বিশ্বের মানটিত্রে স্বাধীন বাংলাদেশ।
এমআর/এম