নিজস্ব প্রতিবেদক: আল জাজিরা টেলিভিশনে সম্প্রতি প্রচারিত একটি প্রতিবেদনের অন্যতম প্রধান চরিত্র সামিউল ওরফে জুলকারনাইন সায়ের খানসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে করা মামলা অধিকতর তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার জন্য ১০ মার্চ দিন ধার্য করেছে আদালত। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সরকারবিরোধী পোস্ট দেয়ার অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) এই আদেশ দেয় আদালত।
এদিন মামলার অধিকতর তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার দিন ধার্য ছিল। তবে মামলার তদন্ত সংস্থা পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি) প্রতিবেদন না দেয়ায় ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর হাকিম আবু বক্কর সিদ্দিক নতুন এ দিন ধার্য করেন।
গত ১৩ জানুয়ারি এ মামলার চার্জশিট দেন তদন্ত কর্মকর্তা। সেখানে তিনজনকে অভিযুক্ত করা হয়। তারা হলেন- কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর, রাষ্ট্রচিন্তার ঢাকার সমন্বয়ক দিদারুল ভূঁইয়া ও লেখক মুশতাক আহমেদ।
তবে প্রমাণ না পাওয়ায় এজাহারভুক্ত আট আসামিকে অব্যাহতির আবেদন করে পুলিশ। তারা হলেন- ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক পরিচালক মিনহাজ মান্নান, নেত্র নিউজের এডিটর ইন চিফ তাসনিম খলিল, যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী সাংবাদিক সাহেদ আলম, জার্মান প্রবাসী ব্লগার আসিফ মহিউদ্দিন, জুলকারনাইন সায়ের খান, আশিক ইমরান, স্বপন ওয়াহিদ ও ফিলিপ শুমাখার।
এ চার্জশিটের ওপর নারাজি দেয় রাষ্ট্রপক্ষ। ১০ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আসসামছ জগলুল হোসেন নারাজি গ্রহণ করে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটকে (সিটিটিসি) তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দেন।
গত বছরের ৫ মে র্যাব-৩ (সিপিসি-১)-এর ওয়ারেন্ট অফিসার মো. আবু বকর সিদ্দিক বাদী হয়ে ১১ জনের নামে রমনা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাত আরও ৫-৬ জনকে আসামি করা হয়।
জানা গেছে, ‘আই অ্যাম বাংলাদেশি’ নামে একটি ফেসবুক পেজে আসামিরা রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি বা সুনাম ক্ষুণ্ণ করতে বা বিভ্রান্তি ছড়ানোর উদ্দেশ্যে অপপ্রচার ও গুজবসহ বিভিন্ন ধরনের পোস্ট করেন। যা জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি এবং আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটায়। ওই পেজের অ্যাডমিন সায়ের জুলকারনাইন এবং আমি কিশোর, আশিক ইমরান, ফিলিপ শুমাখার, স্বপন ওয়াহিদ, মুশতাক আহমেদ নামীয় ফেসবুক আইডিসহ পাঁচজন এডিটর পরস্পর যোগসাজশে ফেসবুক পেজটি দীর্ঘদিন পরিচালনা করছেন।
আহমেদ কবীর কিশোর, তাসনিম খলিল, জুলকারনাইন সায়ের খান, সাহেদ আলম ও আসিফ মহিউদ্দিনের মধ্যে ‘রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক চ্যাটিং’-এর প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
এজাহারে আরও বলা হয়, তাদের ব্যবহৃত স্যামসাং মোবাইল ফোনে ‘আমি কিশোর’ ফেসবুক অ্যাকাউন্ট লগইন অবস্থায় পাওয়া যায়। আলামত পর্যালোচনা করে রাষ্ট্রবিরোধী পোস্ট, মহামারি করোনাভাইরাস, সরকারদলীয় বিভিন্ন নেতার কার্টুন দিয়ে গুজব ছড়িয়ে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টির প্রমাণ পাওয়া যায়। এছাড়াও হোয়াটসঅ্যাপ ও ফেসবুক মেসেঞ্জারে তাসনিম খলিল, জুলকারনাইন সায়ের খান, সাহেদ আলম, আসিফ মহিউদ্দিনের সঙ্গে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক চ্যাটিংয়ের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
সান নিউজ/এসএস