নিজস্ব প্রতিবেদক: খুলনার শিশুশ্রমিক রাকিব হত্যা মামলায় সর্বোচ্চ আদালতের দেয়া রায় শিশু হত্যাকারীদের জন্য একটি বার্তা বলে মন্তব্য করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন।
সোমবার (২২ ফেব্রুয়ারি) নিজ কার্যালয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপ কালে এই মন্তব্য করেন তিনি। এর আগে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ একইদিনে রাকিব হত্যার রায় ঘোষণা করেন।
এর আগে রাকিবের পায়ু পথে বাতাস ঢুকিয়ে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় প্রধান আসামি ওমর শরিফ ও তার সহযোগী মিন্টু খানের যাবজ্জীবন দণ্ড দিয়ে রায় দিয়েছিল হাইকোর্ট। ওই রায়ের বিরুদ্ধে দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামির আপিল করে। আপিল খারিজ করে দিয়ে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের তিন বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ সোমবার রায় দেয়।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, দেখুন এটা আমার মনে হয় শিশু হত্যার সঙ্গে যারা জড়িত নরপিচাশ, যাদের কারণে এ ধরনের জঘন্যতম হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে। তাদের জন্যে এটি একটি বার্তা হবে।
তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ অত্যন্ত কষ্ট করে এ মামলা পরিচালনা করেছে। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ শাস্তি বহাল রেখেছেন। এই রায়ের মাধ্যমে দুটো জিনিস হয়েছে- একটা হচ্ছে অপরাধের শাস্তি দেয়া, অপরটি বার্তা পৌঁছে দেয়া।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ৩ আগস্ট রাকিবের পায়ু পথে হাওয়া ঢুকিয়ে হত্যা করা হয়। খুলনার টুটুপাড়া কবরখানা মোড়ে শরীফ মোটরস নামের এক গ্যারেজে এ ঘটনা ঘটে।
পরদিন রাকিবের বাবা মো. নুরুল আলম বাদী হয়ে শরীফ, মিন্টু ও শরীফের মা বিউটি বেগমের বিরুদ্ধে সদর থানায় হত্যা মামলা করেন।
এর ৯৬ দিন পর বিচারপ্রক্রিয়া শেষে একই বছরের ৮ নভেম্বর রায় দেন খুলনার আদালত। ওই রায়ে মামলার আসামি শরীফ মোটরসের মালিক ওমর শরীফ ও তার সহযোগী মিন্টুকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। এ মামলায় অভিযুক্ত অপর আসামি শরীফের মা বিউটি বেগমকে খালাস দেয় আদালত।
পরে রায়সহ মামলার নথি ওই বছরের ১০ নভেম্বর হাইকোর্টে আসে এবং ডেথ রেফারেন্স হিসেবে নথিভুক্ত হয়। সেই সঙ্গে দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপিল ও জেল আপিল করে আসামিরা।
পরে প্রধান বিচারপতির নির্দেশে মামলার ডেথ রেফারেন্স শুনানির জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পেপারবুক (মামলার বৃত্তান্ত) প্রস্তুত করা হয় এবং হাইকোর্ট বেঞ্চে মামলাটি শুনানির জন্য আসে।
বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের করা আপিলের শুনানি শেষে ২০১৭ সালের ৪ এপ্রিল রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে ওমর শরীফ ও মিন্টুকে বিচারিক আদালতের দেয়া মৃত্যুদণ্ডের সাজার পরিবর্তে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। পরে হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন আসামিরা।
সান নিউজ/এমএ/এসএস