নিজস্ব প্রতিবেদক: লেখক অভিজিৎ রায় হত্যা মামলায় সন্তোষ প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। রায়ে পাঁচ আসামির মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। আসামিরা নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) সদস্য।
রায়ে এবিটির আরেক সদস্যর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
রাষ্ট্রপক্ষের কৌশুলি গোলাম সারোয়ার খান জাকির রায় ঘোষণার পর গণমাধ্যমকে বলেন, ব্লগার ও লেখক অভিজিৎ রায় হত্যা মামলায় পাঁচ সদস্যের মৃত্যুদণ্ড ও একজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত। এ রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। আর আসামিপক্ষের আইনজীবী নজরুল ইসলাম বলেন, এ রায়ে আমরা সন্তুষ্ট নই। রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাব।
মঙ্গলবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমান রায় ঘোষণার পর প্রতিক্রিয়ায় তারা এসব কথা বলেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, মেজর (চাকরিচ্যুত) সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল হক ওরফে জিয়া, মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন (সাংগঠনিক নাম শাহরিয়ার), আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব ওরফে সাজিদ ওরফে শাহাব, আকরাম হোসেন ওরফে আবির, ও মো. আরাফাত রহমান। মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি তাদের প্রত্যেকের পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
আর এ মামলার আরেক আসামি শফিউর রহমান ফারাবির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। কারাদণ্ডের পাশাপাশি পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো দুই বছরের কারাভোগ করতে হবে।
এদের মধ্যে মেজর (চাকরিচ্যুত) সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল হক ওরফে জিয়া ও আকরাম হোসেন ওরফে আবির শুরু থেকেই পলাতক। তাদের বিরুদ্ধে সাজাপরোয়ানা জারি করেছে আদালত।
প্রসঙ্গত ব্লগার ও লেখক অভিজিৎ রায়কে ২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি রাত সোয়া ৯টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসি এলাকায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পাশে সন্ত্রাসীরা কুপিয়ে জখম করে। আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেয়া হলে ওইদিন রাত সাড়ে ১০টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
২৭ ফেব্রুয়ারি অভিজিতের বাবা বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অজয় রায় শাহবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ২০১৯ সালের ১৩ মার্চ ঢাকা মহানগর হাকিম সরাফুজ্জামান আনসারীর আদালতে ছয়জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের পরিদর্শক মনিরুল ইসলাম।
১১ এপ্রিল ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান ছয় আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করেন। ১ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান। মামলায় ৩৪ জন সাক্ষীর মধ্যে বিভিন্ন সময় ২৮ জন সাক্ষ্য দেন।
সান নিউজ/আরআই