আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আফ্রিকা মহাদেশের দ্বীপরাষ্ট্র মাদাগাস্কারে নতুন শ্রমবাজার উম্মুক্ত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য। প্রাথমিক পর্যায়ে প্রায় ১ হাজার ১০০ শ্রমিক পাঠানোর চিন্তা করা হচ্ছে। কর্মী নির্বাচনের জন্য বাংলাদেশে আসছেন প্রকল্প বাস্তবায়ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা।
মাদাগাস্কারের নির্মাণ প্রকল্পে কাজ করবেন এই কর্মীরা। ইতিমধ্যেই বাংলাদেশ দূতাবাস কর্মী নিয়োগের বিষয়ে সম্মতি জানিয়েছে। ফলে আগামী মার্চের মাঝামাঝি এসব কর্মীর ফ্লাইট শুরু হবে আশা করা যাচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পৃথিবীর বৃহত্তম দ্বীপগুলোর মধ্যে অন্যতম মাদাগাস্কার দক্ষিণ-পূর্ব আফ্রিকা মহাদেশের উপকূলে অবস্থিত। এটি দ্বীপরাষ্ট্র হলেও মাদাগাস্কারের আয়তন বাংলাদেশের প্রায় ৪ গুণ। তবে জনসংখ্যা মাত্র আড়াই কোটি। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি মাদাগাস্কার অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে চলছে।
মাদাগাস্কার সরকার প্রায় ১০ হাজার সোশ্যাল হোম নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করেছে। এ প্রকল্পের কাজ পেয়েছে মালয়েশিয়ার এম সিটি ক্যাপিটাল ডেভেলপমেন্ট।
মালয়েশিয়ার এই কোম্পানিটি প্রাথমিক পর্যায়ে ইঞ্জিনিয়ার ও দক্ষ নির্মাণ শ্রমিক এবং অদক্ষ শ্রমিক মিলিয়ে ১২টি ক্যাটাগরিতে প্রায় ১ হাজার ১০০ কর্মী নিয়োগ করবে বাংলাদেশ থেকে। কর্মী নিয়োগের সাক্ষাৎকারের জন্য এম সিটি ক্যাপিটাল ডেভেলপমেন্টের ৩ সদস্যের প্রতিনিধি দল ফেব্রুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে বাংলাদেশ সফরে আসছেন।
পরবর্তীতে আরও কর্মী নেওয়ার চিন্তা আছে কোম্পানিটির। বাংলাদেশের জন্য নতুন এই মাদাগাস্কারের শ্রমবাজার নিয়ে কাজ করছে এশিয়া কন্টিনেন্টাল গ্রুপ (বিডি)। এই কোম্পানি এর আগে রোমানিয়ায় নতুন শ্রমবাজার তৈরিতে ভূমিকা রাখে। এ প্রসঙ্গে কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক লোকমান শাহ বলেন, করোনা মহামারীসহ বিভিন্ন কারণে বাংলাদেশের শ্রমবাজার সংকুচিত হয়ে আসছিল।
এ পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন নতুন শ্রমবাজার সন্ধানের নির্দেশ দেন। এ কাজটি শুধু সরকারের হাতে ছেড়ে না দিয়ে আমরাও বিভিন্ন পর্যায়ে ব্যক্তি উদ্যোগে নতুন বাজার খুঁজতে সচেষ্ট হই। পরে পরিশ্রমের ফসল হিসেবে রোমানিয়া, মাদাগাস্কারের মতো বাজার তৈরি করি।
সবার সহযোগিতা পেলে আরও নতুন নতুন শ্রমবাজার পাওয়ার আশা রাখি। জানা যায়, করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে মধ্যপ্রাচ্যের অর্থনীতি পর্যুদস্ত হলেও সেই মধ্যপ্রাচ্যেই আটকে আছে বাংলাদেশের জনশক্তি রফতানি। এর বাইরে অন্য দেশে বাংলাদেশি শ্রমিকরা গেলেও তার হার অনেক কম।
করোনা পরবর্তী সময়ে তেলনির্ভর মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে কাজের সুযোগ কমে যেতে পারে। ইতিমধ্যেই কয়েক লাখ শ্রমিক দেশের ফিরে এসেছেন। নতুন করে যাদের যাওয়ার কথা ছিল সেই সংখ্যা অনেক কমে গেছে। ফলে বাংলাদেশের শ্রমবাজারের স্বাভাবিক গতি ধরে রাখতে নতুন শ্রমবাজার চালু করাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সান নিউজ/এসএ